ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় শতাধিক যানবাহন
ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শতাধিক যানবাহন
প্রথম নিউজ, ভোলা : ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শতাধিক যানবাহন। এসব যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যায় বেশি। এতে করে ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা, এমনকি দিনের পর দিনও অপেক্ষা করতে হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলোকে।
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাটে যাওয়ার জন্য ইলিশা ফেরিঘাটে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। অপর পারেও একই অবস্থা।
ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানজটের কারণে বেশি বিপাকে পড়েছেন কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে তরমুজ ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পাড়ায় ঘাটেই ট্রাকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরমুজ। গত কয়েকদিনের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভোগান্তি বাড়ছে এ নৌরুটের উভয় ফেরিঘাট এলাকায়।
ইলিশা ঘাটে আটকে থাকা ট্রাকচালক আব্বাস উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, একদিন পার হয়ে গেল লাইনে আটকে আছি। কখন ফেরির নাগাল পাব বলতে পারছি না।
ঘাটে অপেক্ষমাণ পণ্যবাহী ট্রাকচালক সবুজ বলেন, লালমোহন থেকে তরমুজ নিয়ে এসে ইলিশা ঘাটে সিরিয়ালে আটকে আছি। এই তরমুজ নিয়ে চট্টগ্রাম যাব। বেশি দেরি হলে ট্রাকেই তরমুজ নষ্ট হয়ে যাবে।
ট্রাকে তরমুজ পচে যাওয়ায় এভাবেই ঘাটে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি : ঢাকা পোস্ট
কাভার্ডভ্যানচালক সাইফুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় এসেছি। আমার মতো অনেক গাড়ি গতকাল দিনে এবং রাতে এসেছে কিন্তু পার হতে পারেনি। আজও পার হতে পারবো কি না সন্দেহ আছে।
তরমুজ ব্যবসায়ী মোফাজ্জল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি চরফ্যাশন থেকে ৮০ হাজার টাকায় ট্রাক ভাড়া করে তরমুজ নিয়ে হবিগঞ্জ যাচ্ছি। ১২ ঘণ্টা ধরে ইলিশা ঘাটে ফেরির অপেক্ষায় আছি। এত দেরি হলে ট্রাকের ভেতর সব তরমুজ নষ্ট হয়ে যাবে। ঠিক সময়ে পৌঁছাতে না পারলে আমার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে।
বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুট দিয়ে যাতায়াত করে। ২০০৬ সালের এপ্রিলে তিনটি ফেরি নিয়ে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ফেরিঘাটটি চালু করে সরকার। এখন কলমিলতা, কনকচাঁপা, কিষানি ও কাবেরিসহ পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। এছাড়া প্রতিদিন এই ঘাট থেকে কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে আট থেকে ১০টি লঞ্চ লক্ষ্মীপুর, বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ইলিশা ফেরির ঘাটের সহকারী পরিচালক কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ঘাটে ছয়টি ফেরির মধ্যে নিয়মিত পাঁচটি চলছে, অন্য একটির কাজ চলছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তবে দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ খান ঢাকা পোস্টকে জানান, নাব্যতা সংকটে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে স্বাভাবিক গতিতে ফেরি চলাচল করতে পারছে না। আশা করি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।