বিশ্বভ্রমণ পায়ে হেঁটে!

গত ২১শে মে তিনি এমন রেকর্ডধারী ১০ম ব্যক্তির রেকর্ড গড়েছেন। শুধু তিনি কি একা! না, এক্ষেত্রে তার সঙ্গী ছিল সাভানা প্রজাতির একটি কুকুর। সেও তার প্রভু টম চুরিসিকের সঙ্গে চারপায়ে হেঁটে প্রথমবার কুকুরের হেঁটে বিশ্বভ্রমণের রেকর্ড গড়েছে।

বিশ্বভ্রমণ পায়ে হেঁটে!
বিশ্বভ্রমণ পায়ে হেঁটে!

প্রথম নিউজ, ডেস্ক :  হেঁটে পুরো বিশ্বভ্রমণ! এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। তবুও অল্প সংখ্যক মানুষ আছেন। তাদের একজন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির টম চুরিসিক। গত ২১শে মে তিনি এমন রেকর্ডধারী ১০ম ব্যক্তির রেকর্ড গড়েছেন। শুধু তিনি কি একা! না, এক্ষেত্রে তার সঙ্গী ছিল সাভানা প্রজাতির একটি কুকুর। সেও তার প্রভু টম চুরিসিকের সঙ্গে চারপায়ে হেঁটে প্রথমবার কুকুরের হেঁটে বিশ্বভ্রমণের রেকর্ড গড়েছে। এ দিনটি ২১শে মে উদযাপন করা হয়েছে। তারা এদিন পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করে ঘরে ফিরেছে। ফলে তাদেরকে স্বাগত জহানিয়েছে টম চুরিসিকের বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যরা ও শুভাকাঙ্খীরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন।  টম চুরিসিক ও তার কুকুরের এই যাত্রা সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে প্রায় সাত বছর। এ সময়ে তারা পাড়ি দিয়েছে ৪৮ হাজার কিলোমিটার পথ। হ্যাডন টাউনশিপে পিতামাতার বাড়ি। সেখানে ফিরে সিএনএন ট্রাভেলকে টম চুরিসিক বলেছেন, পুরো বিষয়টি ছিল এক পরাবাস্তব ব্যাপার। আমি বিষয়টি নিয়ে কল্পনা করতাম। ভাবতাম পুরো জার্নিটা শেষ করতে কতটা লম্বা সময় লাগবে। যখন তা শুরু হয়ে গেল, রাস্তায় দেখতে পেলাম আমার মতোই অনেক মানুষ। তারাও আমার সঙ্গে হাঁটছে। এই সফরে প্রাথমিক অনুভূতি হলো স্বস্তি পাওয়া। এই টার্গেট আমার জীবনের সঙ্গে জুড়ে ছিল ১৫ বছর ধরে। আর শেষ পর্যন্ত তা সম্পন্ন করতে পেরে আমি যারপরনাই বিস্মিত। 

২০১৬ সালে ১৭ বছর বয়সে স্কি খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান তার দীর্ঘদিনের বান্ধবী অ্যান ম্যারি। এ থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন হেঁটে বিশ্ব পরিভ্রমণের। তিনি বলেন, তার মৃত্যু আমাকে পাল্টে দিয়েছে। আমাকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পথ করে দিয়েছে। আমার চেয়ে অ্যান ম্যারি অনেক ভাল মানুষ ছিল।  টম চুরিসিককে তুলনা করা হচ্ছে ১৯৯৪ সালে অভিনেতা টম হ্যাংকসের অভিনীত চরিত্র ফরেস্ট গাম্প-এর সঙ্গে। যেখানে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, ভ্রমণ করতে হবে তাকে। নিজের জীবনকে নিয়ে এডভেঞ্চারে মেতে ওঠেন। আর উদ্ভট উদ্ভট সব সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন।  গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে পুরো বিশ্ব পায়ে হাঁটা প্রথম ব্যক্তি হলেন স্টিভেন নিউম্যান। তারপর সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে রেকর্ড গড়েন কার্ল বুশবি। তাদের সম্পর্কে পড়াশোনা করে নিজে এই চ্যালেঞ্জ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন টম চুরিসিক। তিনি বলেন, বিশ্বকে জানার জন্য হেঁটে ভ্রমণকে আমার কাছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা বলে মনে হয়। এভাবে ভ্রমণ করে নতুন নতুন স্থানে চলে যাওয়া যায়। আমি শুধু প্যারিস বা ম্যাচু-পিচুতে যেতে চাইনি। আমি পুরো বিশ্বকে জানতে চেয়েছি। দেখতে চেয়েছি মানুষ কিভাবে বসবাস করে। 

পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর তিনি বেরিয়ে পড়েন পথে। তার আগে ভ্রমণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। তিনি তখন কলেজে পড়াশোনা করেন। গ্রীষ্মকাল। এ সময় যে পরিমাণ অর্থ সংগৃহীত হলো, দেখলেন তা দিয়ে দু’বছরের খরচ মেটানো সম্ভব। কিন্তু বাড়ি ছাড়ার ঠিক আগে স্থানীয় একটি কোম্পানি ফিলাডেলফিয়া সাইন তার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পারে এবং তারা স্পন্সর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। টম চুরিসিক বলেন, ওই ব্যবসায়ী জানতেন অ্যান ম্যারি ও তার পরিবারকে। তিনি আমাকে সমর্থন করতে এগিয়ে এলেন।  ২০১৫ সালের ২রা এপ্রিল ২৬তম জন্মদিনে শেষ পর্যন্ত পথে বেরিয়ে পড়লেন টম চুরিসিক। সঙ্গে নিলেন একটি বেবি ট্রলার। তাতে একটি স্লিপিং ব্যাগ, একটি ল্যাপটপ, একটি ক্যামেরা, কিছু খাবার ও দরকারি জিনিসপত্র।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom