বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যুর জেরে ৩ গাড়িতে আগুন
ওসিসহ আহত ৩
প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যুর জেরে ভবনের নিচে পার্কিং করা তিনটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও রামপুরা থানা পুলিশ। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে রামপুরা থানার ওসিসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আজ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে রামপুরা বনশ্রী ডি ব্লকের ৩২ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ডি ব্লকের ৪ নং সড়কের ৩২ নং বাসার একটি কাজের মেয়ে মারা যাওয়ার সংবাদে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আসমা বেগম (৩৩) নামে ওই গৃহকর্মীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সকাল ৮টা থেকে বনশ্রী ই ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ৩২ নম্বর বাসার সামনে জড়ো হন স্থানীয় লোকজন। এ সময় তারা পুলিশকে লাশ উদ্ধারে বাধা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। একপর্যায়ে তারা বাড়িটির নিচ তলায় গ্যারেজে রাখা তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এতে তিনিসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ওসি বলেন, বাড়ির মালিক সাবেক ট্যাক্স কমিশনার দেলোয়ার হোসেন। তার ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান সকাল ৮টার পরে পুলিশকে ফোন করে গৃহকর্মীর উপর থেকে পড়ে মারা যাওয়ার খবর জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৃত গৃহকর্মী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে কানিজ ফাতেমার মিরপুরের বাসায় থাকতেন। কানিজ ফাতেমা তিন দিন আগে গৃহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। আজ সকালে ভবন থেকে নিচে পড়ে ওই গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়। তবে ওই গৃহকর্মী কীভাবে নিচে পড়েছেন সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
ওসি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে দেখেছি আগে থেকেই কিছু লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন। তারা অভিযোগ করে বলছিলেন, মেয়েটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে আমি নিজেও সেখানে যাই। লোকজন তখন শান্তই ছিল। আমি হেলমেট হাতে তাদের সঙ্গে কথা বলছিলাম এ সময় তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে আমিসহ তিনজন আহত হই। ওই বাসার নিচে থাকা অন্তত তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নির্বাপণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর ওই গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আরও জানান, ওই গৃহকর্মী ভবন থেকে পড়ে মারা গেছেন নাকি তাকে ফেলে দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গৃহকর্তার ছেলে আইনজীবী মেহেদী হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।