ফেস টু ফেস হলে খোদার কসম মার্ডার হবে’ ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

ফেস টু ফেস হলে খোদার কসম মার্ডার হবে’ ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ‘সোহেলকে বলবি, তাকে ঘরে গিয়ে মারবো। সে মেডিকেলে পড়ে ছিল কে গেছে দেখার জন্য? মারি ফেলব। সোহেলদের সঙ্গে ফেস টু ফেস হলে খোদার কসম মার্ডার হবে। তাকে মেরে মেডিকেলে পাঠাই দিছি যে কি হইছে? আমরা ওদের বিরুদ্ধে মামলা করছি। ওরা বৈঠক ডাকছে। বৈঠকে আমাকে ওসি, এসপি ফোন করছে।’

মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার আসামিদের কথোপকথন এটি। যেখান থেকে বাদ দেওয়া হয় অশ্লীল ও গালিগালাজের কথোপকথন। সম্প্রতি এই কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

রেকর্ডে-সোহেল নামে যাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তিনি মামলার বাদী। আর যে হুমকি দিচ্ছেন তিনি হাসান মুরাদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। 

এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী আহমেদ হোসেন সোহেল নিজের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট বেগম নাজমুন নাহার আদালতেও একটি আবেদন করেছেন। 

আবেদনটি গ্রহণ করে আগে থেকে অভিযুক্ত হাসানসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার নথিতে যুক্ত করেছেন আদালত। যদিও অভিযোগের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হাসান মুরাদ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আহমেদ হোসেন সোহেল হাটহাজারীর উত্তর ফতেয়াবাদ দক্ষিণ পাহাড়তলী নন্দীরহাট এলাকার হাজী মো. মুছার ছেলে। তিনি ওই এলাকায় ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আগে ব্যবসা নিয়ে অভিযুক্ত হাসানের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। 

সেই বিরোধের জেরে গত ২৯ অক্টোবর রাতে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রাম আদালতে অভিযুক্ত হাসানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী সোহেল। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে চার আসামির বিরুদ্ধে ১৫ নভেম্বর হাটহাজারী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয়। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। 

এদিকে বিচারাধীন মামলাটি তুলে ফেলতে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ভুক্তভোগী আহমেদ হোসেন সোহেল বলেন, আসামি হাসান মুরাদ আমাকে প্রাণে হত্যার জন্য হুমকি দিয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে আদালতে প্রতিকার চেয়েছি। এসপি অফিসে আবেদন করেছি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান মুরাদ বলেন, অভিযোগের সবকিছুই ভিত্তিহীন।  

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু সায়েম মোহাম্মদ নাসিম উদ্দীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মামলার বাদীকে আসামি হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি আমরা আদালতে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে মামলার নথিতে সংযুক্ত করেছেন।