পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য অসৎ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: শিমুল বিশ্বাস

পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য অসৎ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: শিমুল বিশ্বাস
পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য অসৎ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: শিমুল বিশ্বাস

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপি’র বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘটের দায় বিএনপি নেতাদের ওপর চাপিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য অসৎ, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত উল্লেখ করে সেগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।  রোববার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পদে থাকার কারণে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কৌশলে সরাসরি ধর্মঘটের দায় আমার ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করেছেন। যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নিন্দনীয়। বাস্তবতা হচ্ছে, অধিকাংশ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারাই সারাদেশে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে গণপরিবহন ধর্মঘটের বিপক্ষে। তাদের সিদ্ধান্তে এই ধর্মঘট হচ্ছে না। সরকার ও প্রশাসন চাপ দিয়ে এই ধর্মঘটের ঘটনা সৃষ্টি করছে। মালিক ও শ্রমিক নয়, সরকারই এসবের সঙ্গে যুক্ত। মূলতঃ বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জোরপূর্বক পরিবহন বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছেন, যাতে ওইসব সমাবেশে বিএনপির লোকজন কম আসে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ডাকা এসব ধর্মঘটে মালিক-শ্রমিকদের যেমন আর্থিক লোকসান হচ্ছে, তেমনি তাদের রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সরকার শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার কারণে পরিবহন সেক্টরের নিরীহ মালিক ও শ্রমিকদের গায়ে রাজনৈতিক তকমা লেগে যাচ্ছে। মালিক ও শ্রমিকরা সত্যিই কষ্টে আছেন। আর, ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা অসৎ উদ্দেশ্য ও সুকৌশলে বিরোধী দলীয় শ্রমিক ও মালিক নেতাদের নাম জড়িয়ে বক্তব্য দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছেন। তবে, তাদের এই কৌশল রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেনি।

শিমুল বিশ্বাস বলেন, মালিক ও শ্রমিকরা বিরোধী রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচীতে বাধাদানের উদ্দেশ্যে সরকারি প্ররোচনায় আয়োজিত ঐসব ধর্মঘটের বিপক্ষে। সরকার চক্রান্ত করে বিএনপি’র পরবর্তী সমাবেশগুলোকে ঘিরে আবারো কোন ধর্মঘট আয়োজন করলে তার বিপক্ষেই অবস্থান থাকবে শ্রমিক ও মালিকদের। উল্লেখ্য, রোববার (৩০ অক্টোবর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোনো প্রকার বাধাবিঘ্ন আমরা সৃষ্টি করি নাই। পরিবহন ধর্মঘট... পরিবহনের লোকেরা তাদের ভয় পায়। আমরা কী করব? সেখানে আওয়ামী লীগও আছে, বিএনপিও আছে। জাতীয় পার্টিও আছে, সবাই আছে।’ শ্রমিক ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিএনপির শিমুল বিশ্বাস মন্তব্য করে বিএনপিকে পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করারও পরামর্শ দেন তিনি।  

অন্যদিকে, শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, “পরিবহন মালিকদের যে সংগঠন আছে, সেখানে বিএনপি আছে, আওয়ামী লীগ আছে, জাতীয় পার্টি আছে, জাসদসহ বিভিন্ন দলেরই মানুষ আছে। শিমুল বিশ্বাস বাবু তো পরিবহন নেতা, তিনি তো বিএনপি করেন। উনারাই তো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ধর্মঘট ডাকার। সুতরাং বিএনপি ঘরানার পরিবহন মালিকরাও শঙ্কিত এবং তারা কেউই যাতে বিএনপির অপরাজনীতির শিকার না হন, সে জন্য সবাই মিলেই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”