পরীক্ষামূলকের জন্য ফারাক্কা বাঁধ চালু আজও তা শেষ হয়নি : নজরুল ইসলাম
প্রথম নিউজ, ঢাকা: পরীক্ষামূলকভাবে দুইমাসের জন্য ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হয়েছিল। কিন্তু আজ পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পরীক্ষামূলক শেষ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশন আয়োজিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানুর সভাপতিত্বে এবং কৃষকদলের সাবেক নেতা এসকে সাদী’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, নাজমুল হক নান্নু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কৃষক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মাইনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফারাক্কা দিবস একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, এ দিবসের অন্যতম প্রধান মানুষ হলেন মওলানা ভাসানী। মার্শাল ল কোর্টে আমিসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। তারপর মাওলানা ভাসানীর এক চিঠিতে আমিসহ সবাই মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম। এর পেছনে কারণ ছিল জিয়াউর রহমানের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন মওলানা ভাসানী। এরপর মামলা থেকে অব্যাহতি মেলে আমাদের।’
মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, ‘এই ফারাক্কা বাঁধ আমাদের জন্য মরন ফাঁদ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সঠিক কথাই বলেছিলেন মওলানা ভাসানী। পরীক্ষামূলক জন্য দুইমাসের জন্য এ ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হয়েছিল। কিন্তু আজ পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো পরীক্ষামূলক শেষ হয়নি। বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখা হয়েছে। ভারত সেই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন, চাষাবাদ সব করছে। অথচ আমাদের দেশ পানি পায় না। পদ্মা নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। উত্তরের জেলাগুলোর উষ্ণতা বেড়েছে। আর দক্ষিণের লবণাক্ততা বেড়েছে। আমাদের রূপসা নদীর সুপানিয় ছিল। পানির অভাবে সেটাকে আর রক্ষা করা যায়নি। আজ দক্ষিণ অঞ্চলে ঘের দিয়ে চিংড়ি চাষ হয় কিন্তু ফসল আবাদ হয় না। ক্লাইমেট চেঞ্জ হয়েছে এ ফারাক্কা বাঁধের কারণে।’
বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, ‘এ থেকে আমরা কি ভাবে বাঁচতে পারি সেজন্য জিয়াউর রহমান আমাদের নদী, খাল কেটে পানি ধারণ করার ব্যাবস্থা করেছিলেন। যা দিয়ে আমরা জমিতে চাষাবাদ করতে পারি। আজ ঢাকার বায়ু দূষণ হয়ে গেছে। বৃষ্টি পাত কমে গেছে। জীবন-যাপন অপযোগী হয়ে গেছে। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, সেই কাম্য বাংলাদেশ আমরা পাই নাই। মওলানা ভাসানী সত্যি বলেছিলেন, আজও আমরা সেই কাম্য বাংলাদেশ পাই নাই। যে জন্য স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম, তার কোনটাই আমরা পাইনি। জবাবদিহিতার কোনটাই নেই দেশে। দায়বদ্ধতা বলতে কিছু নেই। দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প নাই। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতা ঠিক রাখতে পারবে। তা ছাড়া অন্য কিছু সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘পথ আমাদের সামনে একটাই খোলা, যদি সম্মানের সাথে বাঁচতে চাই। এদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। এইজন্য আমদের লড়াই করতে হবে। এ লড়াইয়ে আমরা অবশ্যই বিজয় অর্জন করবো। ইনশাআল্লাহ।’