পদযাত্রায় সন্ত্রাসী হামলা ও গ্রেফতারে ফখরুলের নিন্দা
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান শাসকগোষ্ঠী গণআন্দোলনে এতটাই ভীত যে, বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা, গুলি ও গ্রেফতার করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী সকল জেলায় শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের হামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান শাসকগোষ্ঠী গণআন্দোলনে এতটাই ভীত যে, বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা, গুলি ও গ্রেফতার করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ দেশের বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরকে যেকোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে গ্রেফতার করে মিথ্যা ও রাজনৈতিকহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় জড়িয়ে নির্যাতন-নিপীড়নের পন্থা অবলম্বন করেছে। এর একমাত্র লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত রেখে আবারো প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই বর্তমান এ সরকার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম অব্যাহত রেখেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি ও দমণ-নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি ও গণ-বিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে-আজ দেশব্যাপী সকল জেলায় বিএনপির উদ্যোগে পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল বলেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপডি এম এ সালাম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকরাম হোসেন তালিম ও সদস্য শাহেদ আলীসহ ৪৭ জন, কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতা এ কে বিশ্বাস বাবু, শহীদ সরকার মঙ্গল, আমিরুল ইসলাম মন্টুসহ ২০ জন, নেত্রকোণায় বিএনপি নেতা কাদির, আলমগীর, এখলাস মেম্বার, বকুল মিয়া, রুবেল মিয়াসহ ১০ জন, ঝালকাঠিতে জেলা যুবদল সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তৌহিদ হোসেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো: শামীম মৃধাসহ ১৬ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুরুতর আহত করা হয়েছে ফেনী সদর উপজেলা ৭ নম্বর বালিগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক নুর নবী, কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতা বশিরুল আলম চাঁদ, ওয়াকার পারভেজ, কৌশিক আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম অনিক, নাঈম শেখ ও সাগির কুরাইশসহ ৩০ জন, ঝালকাঠিতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন, নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান হেলাল, ঝালকাটি পৌর বিএনপির সভাপতি মো: নাসিমুল হাসানসহ ৫৭ জন, নেত্রকোণায় বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন, কামরুল হক, আশরাফুল ইসলাম, নুরুল ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে। যার মধ্যে ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। কুমিল্লায় পুলিশের বেপরোয়া গুলিবর্ষণে গুরুতর আহত হয়েছেন ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মী। গ্রেফতার করা হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন নেতাকর্মীকে। কুমিল্লা, নেত্রকোণাসহ বিভিন্ন জেলায় গুলি, ককটেল হামলাসহ মারাত্মক নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের হামলায় শতাধিক নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।
শান্তি সমাবেশের নামে আওয়ামী লীগ দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজ বিএনপির শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার ও হামলার মধ্য দিয়ে বর্তমান কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকার নিষ্ঠুরতার আরো একটি নজির স্থাপন করল। তবে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার ও তাদের ওপর হামলা-নির্যাতন চালিয়ে চলমান গণআন্দোলনকে দমন করা যাবে না। মানুষ এখন জেগে উঠেছে। অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না ঘটিয়ে জনগণ ঘরে ফিরে যাবে না। বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: