নির্বাচনে অংশ নিলেই বহিস্কার
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি, আগের সিদ্ধান্ত এখনও বহাল
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ১৮২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তোড়জোড় শুরু হলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের নেই কোন আগ্রহ। বরং বিএনপি নেতারা মনে করেন ৭ জানুয়ারীর একতরফা জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপিকে টুপে ফেলতে উপজেলা নির্বাচন করতে চাচ্ছে সরকার। তাই উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি- এমন সিদ্ধান্তে এখনও অটল দলের হাইকমান্ড। পদ-পদবি ব্যবহার করে কেউ নির্বাচন করলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে বহিষ্কার করা হবে– এমন কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীকে। দলের নেতারা জানান, বিএনপির কেন্দ্র থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়ালি বৈঠকে তৃণমূল নেতারা এমন মতামত তুলে ধরেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। যারা এই সিদ্ধান্ত অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন দলের শীর্ষ নেতা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং একদফা দাবি আাদায়ের যে কর্মসূচি চলছে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিএনপির কোন পর্যায়ের নেতাকর্মী যদি উপজেলাসহ যে কোন নির্বাচনে অংশ নেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূর্বে নির্বাচনে নেওয়া নেতাদের মতো আজীবন বহিস্কার করা হবে তাদের।
দলের তৃণমূলের নেতারাও মনে করেন একদফা দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলনে সরকারের সীমাহীন দলন নিপীড়নে জর্জরিত বিএনপি নেতারা। প্রতিটি বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, কারও কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ মামলাও রয়েছে। আদালতের বারান্দায় সময় পার করতে হয় নেতাকর্মীদের। যারা এখনও জামিন পাননি তারা রয়েছেন কারাগারে। অনেকে এখনও বাড়িতে ফিরতে পারেননি। এমতাবস্থায় উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলার খড়গ আরও বাড়বে। জুলুম নির্যাতন আরও বাড়বে। তাই তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও চান এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ না নিতে।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন ডামি সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের উপজেলা নির্বাচনে নিতে ফাঁদ পেতেছে। কিন্তু কোন লাভ হবে না। এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। বিএনপি তাদের পূর্বের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। ইতিপূর্বে জাতীয় নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। যারা অংশ নিয়েছলি তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারও যদি কেউ নির্বাচনে অংশ নেয় বা সমর্থন দেয় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকতারুল আলম মাস্টার বলেন, এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ নেওয়া মানে নিজেদের বিপদ নিজেরা ডেকে আনা। তারা টুপ ফেলে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে পারলে রেজাল্ট যা হওয়ার তাই হবে। জোর করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। আর মাঝ খান থেকে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা বাড়বে। জেল জুলুম খাটতে হবে ফাও। তিনি বলেন তাদের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়াই যুক্তিযুক্ত।