নিরাপত্তাহীনতায় বুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

এজন্য আজ (রোববার) সকাল ৭টায় অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিলেও সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে বিকালে সংবাদ সম্মেলনে তারা নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান।

নিরাপত্তাহীনতায় বুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রবেশের ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন নেমে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এজন্য আজ (রোববার) সকাল ৭টায় অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিলেও সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে বিকালে সংবাদ সম্মেলনে তারা নিরাপত্তাহীনতার কথা জানান।

এদিন বিকালে বুয়েটের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্যে বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের পক্ষে আন্দোলনরত সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীরা আজ ৩১শে মার্চ নিরাপত্তাজনিত তীব্র শঙ্কার কারণে কেউ কোনও ধরনের সমাগম করেনি।

তারা জানান, ক্যাম্পাসের আশপাশের সব এলাকায় গতকাল রাত থেকে ক্রমাগত মাইকিং, শিক্ষার্থীদের ফোন কলে হুমকি-ধমকি প্রদান করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানারকম গুজব, বুয়েট শিক্ষার্থীদের মিথ্যা ট্যাগ দেয়া, শিক্ষার্থীদের ছবি নাম পরিচয়সহ পোস্ট করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়, এমন সব অপপ্রচাচালানো হয়েছে। এমতাবস্থায় বুয়েট ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকা বুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। এমনকি বুয়েট ক্যাম্পাসের বাইরেও শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। নিরাপত্তাজনিত এসব কারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আজ ক্যাম্পাসে অবস্থান না নেয়ার মানে এই নয় যে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের দাবি থেকে সরে এসেছে। এ দাবি বুয়েটের সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীর।

আজ ২০ ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে একজন ছাড়া বাকি সবাই বিরত ছিল জানিয়ে তারা বলেন, ১২১৫ জন ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ১২১৪ জনই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এ থেকেই শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত নৈতিক অবস্থান ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কতটুকু সুদৃঢ় তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। ৩০শে মার্চ ২২তম ব্যাটের প্রথম টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাতে কোনও শিক্ষার্থীই অংশ নেননি। কোনও বাধা ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকছেন। 

সম্প্রতি মিডিয়ায় বুয়েটের আন্দোলনরত বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সংশ্লিষ্টরা অপপ্রচাচালাচ্ছে দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আবারও সাফ জানিয়ে দিতে চাই যে আমাদের অবস্থান কোনও একক ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়। বরং বুয়েট ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের সব ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বরাবরই একটি নিরাপদ এবং সুস্থ ক্যাম্পাস চেয়ে এসেছে, যেখানে ক্ষমতা চর্চা বা লোভ-লালসার শিকলে আবারও জিম্মি হয়ে যাবে না সবার নিরাপত্তা, শিক্ষাঙ্গনের উপযুক্ত পরিবেশ।

বুয়েটের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের এবং স্বাধীনতার চেতনায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী বলেও জানান তারা।