নৌকার প্রার্থির জন্য লাশ পড়লে দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা, আটক আওয়ামী লীগ নেতা
বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে শেখ জুবায়ের হাসান নামের ওই নেতাকে আটক করা হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে নৌকার প্রার্থীর জন্য মার্ডারের দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেয়ায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে শেখ জুবায়ের হাসান নামের ওই নেতাকে আটক করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী বি. এম. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের সমর্থনে গোকর্ণ গ্রামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর একটি উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন স্থানীয় গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জোবায়ের হাসান। গ্রামের ইমরান হাসান রঞ্জুর বাড়িতে হওয়া ওই বৈঠকে রাত ৮টার দিকে জুবায়ের বক্তৃতা করেন বলে জানান স্থানীয়রা। এরপরই ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে রাত ২টার দিকে গোকর্ণ গ্রাম থেকে পুলিশ তাকে আটক করে।
ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও বক্তব্যে তাকে বলতে শুনা যায়, 'একদম কইলজাডা বড় কইরা, আমি কইলাম হান্নান ভাইয়ের ইলেকশনের সময় বলছিলাম হাসান ভাইয়ের বাড়িতে, একটা মার্ডার আমি গইচ্ছা নিমো যদি হান্নান মার্ডার করে, আর দুইটা মার্ডার হইলে আপনারা সারা গ্রাম গইচ্ছা নিয়েন। মার্ডার লাগদোনা। মার্ডার যদি সংগ্রাম ভাইয়ের পক্ষে হেইডাও গইচ্ছা নিমো। কিন্তু আমার কর্মীরা পিছপা অইতে পারতো না। এইবার আমরা গোকর্ণ গ্রাম, দেখাই দিতে চাই ২ নম্বর ওয়ার্ড। আমরা একতা, আমরা ভোট দিতে পারি। কোন সর্দারের ছত্রছায়ায় নাই, চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় নাই, কোন পয়সা ওয়ালার ছত্রছায়ায় নাই।'
এ বিষয়ে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহাগ রানা জানান, জোবায়েরকে শুক্রবার সকালে ১৫১ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুল হক ভূইয়া বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। যিনি হুমকি দিয়েছেন, তিনি অ্যারেস্ট হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, জোবায়ের জেলা সদরের শিমরাইলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। গোকর্ণ গ্রামে তার নানার বাড়ি। তবে জায়গা-জমি কিনে এখানে মাছের প্রজেক্ট করে তিনি নিজেও স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। গোকর্ণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে তার। এজন্যে জেলা শহর থেকে নিজের ভোটও স্থানান্তর করেছেন গোকর্ণে। জুবায়েরের এই বক্তব্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে ভোটারদের মধ্যে।