ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিটিআরসি কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিতভাবে এই আদেশ দেন।
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন।
তিনি শিশুটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান। আদালত এ বিষয়ে আজকেই আদেশ দেবেন বলে জানান আইনজীবী।
মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন আট বছরের ওই শিশুটি। গত ৫ মার্চ দিবাগত রাতে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার শিশুটি বর্তমানে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়।
ওই বাড়িতে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুর থাকতেন। বিয়ের পর থেকে বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তার শ্বশুর হিঠু শেখ।
বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ১ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বকছে। এরপর সকাল ৬টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যান।
আরো বলা হয়, ঘটনা জানার পর শিশুটির বড় বোন তার মাকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানাতে গেলে তার স্বামী মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করেন। এ কথা কাউকে বললে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেন এবং তাদের দুই বোনকে আলাদা দুটি কক্ষে আটকে রাখেন। সকালে এক নারী প্রতিবেশী বাড়িতে এলে বোনের ভাসুর দরজা খুলে দেন। তখন শিশুটির মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করানোর চেষ্টা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি আরো অসুস্থ হয়ে পড়লে বোনের শাশুড়ি অন্য প্রতিবেশীদের সহায়তায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে জিনে ধরেছে বলে চিকিৎসকদের জানান। তবে চিকিৎসক ও অন্যরা বিষয়টি টের পেলে শাশুড়ি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পরে বাদী হাসপাতালে যান।
এদিকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানান ঢামেক হাসপাতালের উপপরিচালক আশরাফুল আলম।
তিনি বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশক্রমে ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুয়ায়ী শিশুটিকে ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শেখ কবির কাবিকো কনস্ট্রাকশন লিমিটেডে ভাঙচুর ও তিন লাখ টাকা লুট করার অভিযোগে গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কলাবাগান থানার আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সালমানসহ সাতজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে অপর সাতজন শিশু হওয়ায় তাদের গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
কারাগারে যাওয়া অন্য আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান রিয়েল খান, সাজিদুল ইসলাম তাহমিদ, শাহাদাত হোসেন, মীর ফাহাদ আহমেদ উৎস, ছাব্বির আহম্মেদ আবির ও ফারহান।
তাদের বাইরে সাতজনকে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর পান্থপথে ত্রিধারা টাওয়ারের তৃতীয় তলায় শেখ কবির কাবিকো কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ৭ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে গ্রেপ্তার আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৭ জন পরিকল্পিত ও দলবদ্ধভাবে শক্তির মহড়া ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে।
ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বেআইনি বলপ্রয়োগ করে জোরপূর্বক অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজ শুরু করে।
সেখানকার পিয়ন ইয়াসিন মৃধা তাদের পরিচয় জানতে চান। তখন তারা বলেন, ‘তোর মালিক শেখ কবিরকে অফিস চালাতে হলে আমাদের চাঁদা দিতে হবে।’ তিনি প্রতিবাদ করলে আসামিরা তৎক্ষণাৎ অফিসের চেয়ার, টেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করার মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে এবং অফিসে থাকা চারটি ডেস্কটপ কম্পিউটার, অফিসের টেবিলের ড্রয়ার ভেঙে নগদ তিন লাখ টাকা লুট করে আসামিদের মধ্যে কয়েকজন অন্যত্র রেখে আসে। অফিস পিয়নের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করেন।