তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে ৩৭ চীনা যুদ্ধবিমান

তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে ৩৭ চীনা যুদ্ধবিমান

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরবরাহ করা এই ছবিতে একটি চীনা জে-১৬ যুদ্ধবিমান দেখা যাচ্ছে (ফাইল ছবি)

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা আকাশসীমায় আবারও বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটিয়েছে চীন। প্রায় ছয় ঘণ্টার মধ্যে ৩৭টি চীনা যুদ্ধবিমান ভূখণ্ডটির আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করেছে।

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এদিকে এই ঘটনায় তাইওয়ান প্রণালীর আশপাশে আবারও নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ টিরও বেশি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রায় ছয় ঘণ্টর মধ্যে প্রবেশ করেছে বলে দ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। চীন স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজের এলাকা বলে দাবি করে থাকে। এমনকি প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে একদিন তা দখল করার অঙ্গীকারও করেছে পরাশক্তি এই দেশটি।

এএফপি বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন (এডিআইজেড) লঙ্ঘন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে চীন। আর ২০২১ সালের তুলনায় এই ধরনের লঙ্ঘনের ঘটনা ২০২২ সালে প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছে যায়। বেইজিংয়ের এই কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা চলতি বছরও অব্যাহত রয়েছে।

তাইওয়ানের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সান লি-ফ্যাং জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ৫ টা থেকে ‘মোট ৩৭টি চীনা সামরিক বিমান’ তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোনে (এডিআইজে) প্রবেশ করেছে।


তাইওয়ানের এডিআইজে ভূখণ্ডটির আকাশসীমার চেয়ে অনেক বড়। তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী ‘পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’ জানিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টুইটারে বলেছে, টহল বিমান, নৌযান এবং স্থল-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।

অবশ্য চীনা যুদ্ধবিমানের এই অনুপ্রবেশ এখনও চলমান রয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করেনি তাইওয়ানের এই মন্ত্রণালয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা অঞ্চল নিয়ে চীনের এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেশটির বৃহত্তর ‘গ্রে-জোন’ কৌশলের অংশ, যার লক্ষ্য দ্বীপটিকে চাপে রাখা।

উল্লেখ্য, তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং।

এজন্য তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত করতে সামরিক পথ খোলা রাখার বিষয়টিও বলে রেখেছে চীন।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। এরপর থেকে তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।