ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ: সর্বনিম্ন দামে আটকা ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান
প্রথম নিউজ, ঢাকা : টানা দরপতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। তবে আরও প্রকট হয়ে উঠেছে ক্রেতা সংকট। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে গেছে।
গত কয়েক কার্যদিবস ধরেই প্রতিদিন নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম ফ্লোর প্রাইসে যুক্ত হচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে ফ্লোর প্রাইসে আটকানো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। ফলে লেনদেনের গতিও কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার দাম কমে নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে আরও ১০ কোম্পানির শেয়ার। এতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে যায়। যা লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ৬৬ শতাংশ।
ফ্লোর প্রাইসে আটকে যাওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। প্রতিদিন দিনের সর্বনিম্ন দামে বা ফ্লোর প্রাইসে এসব প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ শেয়ার ও ইউনিট বিক্রির আদেশ আসছে। বিপরীতে শূন্য পড়ে থাকছে ক্রয়াদেশের ঘর। ফলে যারা দিনের সর্বনিম্ন দামে বিক্রির চেষ্টা করছেন ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের সিংহভাগ।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ৩ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টাজুড়ে সূচকের পতন প্রবণতা অব্যাহত থাকে। তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে বাজার পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। আর শেষ আধাঘণ্টার লেনদেনে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মাত্রা কমে। ফলে সূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২২০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২১৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৬টির এবং ২০৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০টির শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ কমে ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। এতে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফ্লোরে আটকানোর সংখ্যা দাঁড়ায় ২১০টি।
তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকায় লেনদেনের গতিও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬০৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১২৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের ২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, এডিএন টেলিকম, জেনেক্স ইনফোসিস, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আমরা নেটওয়ার্ক, শাইনপুকুর সিরামিকস এবং আলহাজ টেক্সটাইল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১টির এবং ৯০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: