জাতিসংঘে রাশিয়ান ‘সন্ত্রাসের’ তীব্র নিন্দা জেলেনস্কির

ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া

জাতিসংঘে রাশিয়ান ‘সন্ত্রাসের’ তীব্র নিন্দা জেলেনস্কির
জাতিসংঘে রাশিয়ান ‘সন্ত্রাসের’ তীব্র নিন্দা জেলেনস্কির-প্রথম নিউজ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এরপর পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিজুড়ে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি হয়েছে। আর এরপরই রাশিয়াকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কি।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে তিনি একথা বলেন। এছাড়া রাশিয়ান সন্ত্রাসের তীব্র সমালোচনাও করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ভিডিওলিংকের মাধ্যমে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্টে ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, রাশিয়ার সন্ত্রাসের কারণে শূন্য ডিগ্রির নিচের ঠান্ডা আবহাওয়ায় কোনো ধরনের বিদ্যুৎ ছাড়া লাখ লাখ মানুষ উষ্ণ ও পানি ছাড়া থাকতে বাধ্য হচ্ছে।

ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।

ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন তিনটি প্ল্যান্ট গ্রিড থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টে কুলিং সিস্টেম ও সেখানকার মূল সুরক্ষা সরঞ্জামগুলোকে চালু রাখার জন্য আবারও ডিজেল জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) রাশিয়ান নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্ট সম্পর্কে বড় ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মূলত যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই স্থাপনাটি বারবার গোলাবর্ষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রুশ হামলার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবেশী মলদোভাও বুধবার ব্যাপক ব্ল্যাকআউটের সম্মুখীন হয়। যদিও সেখানে সরাসরি আঘাত করা হয়নি। এছাড়া শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে মস্কো ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বাড়িয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।

এর মধ্যে গত মাসে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েক দফায় ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়।

বিবিসি বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহেই ইউক্রেনে সবচেয়ে ভারী বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। ওই হামলায়ও ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো এবং বেসামরিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।

মূলত সম্মুখসারির যুদ্ধে ব্যর্থতার পর রাশিয়ার সাম্প্রতিক এসব হামলা একটি বিস্তৃত কৌশলের অংশ এবং শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইউক্রেনে রুশ এই কৌশলের প্রভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হতে শুরু করেছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে ‘প্রচুর’ ক্ষতি হয়েছে এবং দেশের অর্ধেকেরও বেশি গ্রিড মেরামতের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে প্রেসিডেন্টে জেলেনস্কি বলেন, কিয়েভের পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’ রয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য রাতভর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, রাজধানীর অন্তত ৮০ শতাংশ বাসিন্দার কাছে বিদ্যুৎ বা পানি সরবরাহ নেই।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom