কানাডার নাক গলানো নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত- জয়শংকর
খালিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারত-কানাডা কূটনীতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ কাজে সমানে নাক গলাচ্ছেন কানাডার কূটনীতিকরা। আর বিষয়টি নিয়ে আমরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। রোববার (২২ অক্টোবর) জয়শংকর বলেন, একবার নয়, একাধিকবার ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়েছেন কানাডার কূটনীতিকরা। সেই ঘটনা নিয়ে ভারত যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। তবে আমার মনে হয়, এখনো এ প্রসঙ্গে খুব বেশি তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। খালিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারত-কানাডা কূটনীতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর।
তিনি বলেন, কিছুটা সময় কাটলে নিশ্চয়ই সব তথ্য প্রকাশ করা হবে। তখন সবাই বুঝতে পারবেন, কেন কানাডা নিয়ে আমাদের সমস্যা হয়েছিল। তবে কানাডার ভিসা সমস্যা খুব দ্রুত কেটে যাবে বলে আশাবাদী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নেয় কানাডা। নয়াদিল্লি আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, শুক্রবারের মধ্যে উত্তর আমেরিকার দেশটিকে অন্তত ৪০ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই ডেডলাইন শেষ হওয়ার আগেই কানাডা মোট ৪১ জন কূটনীতিককে ভারত থেকে সরিয়ে নেয়। যদিও এ কাজের নেপথ্যে ভারতকেই দায়ী করেছিল কানাডিয়ান সরকার। তবে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে ভারত।
প্রসঙ্গত, ভারতের পরেই কানাডায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিখ বসবাস করেন। দেশটির ২০২১ সালের জনশুমারির তথ্য বলছে, প্রায় ৮ লাখ শিখ ধর্মাবলম্বী উত্তর আমেরিকার এ দেশে বসবাস করেন।
চলতি বছরের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের ভ্যানকুভার শহরের একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) কাছে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন হরদীপ সিং নিজ্জর। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতকে সরাসরি দায়ী করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ট্রুডো বলেন, তার দেশের গোয়েন্দারা হরদীপ হত্যায় ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছেন। কানাডার জন্য এ ঘটনাটি যে তীব্র অবমাননাকর, তা বোঝাতে গিয়ে পার্লামেন্ট ভাষণে ট্রুডো বলেন, কানাডার মাটিতে একজন কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার সঙ্গে বিদেশি সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
ভারত সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, স্বাধীন, মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা যেভাবে কাজ করে, হরদীপ হত্যাকাণ্ড সেই মৌলিক নিয়মনীতির পরিপন্থি।
ট্রুডো পার্লামেন্টে এ অভিযোগ তোলার পরদিনই কানাডায় নিযুক্ত ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিসি উইংয়ের কানাডা শাখার প্রধানকে বহিষ্কার করে কানাডিয়ান সরকার। এর পরদিনই পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কানাডিয়ান দূতাবাসের একজন জেষ্ঠ্য কূটনীতিককে ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেয় নয়াদিল্লি। এরপর থেকে দেশ দুটির কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমেই খারাপের দিকে যেতে শুরু করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি