এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১৩০০ কোটি ডলার

চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ এক সঙ্গে শত কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে।

এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১৩০০ কোটি ডলার

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। গত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ এক সঙ্গে শত কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, এক বছর আগে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৪০৬ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১০৬ কোটি ডলারে। গত মার্চের শেষে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ১১৪ কোটি ডলার। গত এক মাসের হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ৮ কোটি ডলার। ধারণা করা হয়েছিল রোজা ও ঈদ উপলক্ষ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে। এতে রিজার্ভও কিছুটা বাড়বে। কিন্তু এবার রোজা ও ঈদে রেমিট্যান্স প্রবাহ খুব বেশি বাড়েনি। একই সঙ্গে রপ্তানি আয়েও নেতিবাচক অবস্থা। এদিকে রোজা উপলক্ষ্যে আমদানি বেড়েছে। সব মিলে রিজার্ভ কমেছে। 

গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের আকুর দেনা বাবদ শত কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে। এতে রিজার্ভ আরও প্রায় শত কোটি ডলার কমে যেতে পারে। ফলে রিজার্ভ ৩ হাজার কোটি ডলারের ঘরে নেমে যাবে। আগামী জুনের মধ্যে রিজার্ভ আরও কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)। সূত্র জানায়, আগামী নভেম্বরে মিলবে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ। এর আগে চলতি মাসের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তার অর্থ বাবদ ৫০ কোটি ডলার মিলতে পারে। তখন রিজার্ভ কিছুটা বাড়বে। 

আগে রিজার্ভ বাড়ত রেমিট্যান্সের অর্থে। রপ্তানি আয় দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানোর পর রেমিট্যান্স থেকে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ ব্যয় হতো আমদানি খাতে। বাকি ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ জমা হতো রিজার্ভে। বর্তমানে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ায় আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ফলে এখন রেমিট্যান্সের পুরো অর্থই আমদানি খাতসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় হচ্ছে। রিজার্ভে যোগ হচ্ছে না। যে কারণে রিজার্ভও বাড়ছে না। উলটো কমে যাচ্ছে। কারণ রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে জরুরি আমদানি ব্যয় বাবদ ডলারের জোগান দিতে হচ্ছে। 

গত মার্চে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় মিলে আয় হয়েছে ৬৬২ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আমদানি খাতে গত ফেব্রুয়ারিতে ব্যয় হয়েছে ৭৭২ কোটি ডলার। ঘাটতি হয়েছে ১১০ কোটি ডলার। এছাড়া বৈদেশিক ঋণের বকেয়া কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে এখন। এসব মিলে রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বেড়েছে।