আপনি কোনো দলকে ফেলে দিতে পারেন না : সাবেক সিইসি আবু হেনা

বক্তরা বলেন, নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হয়, তবে সে নির্বাচন অর্থহীন। সেটি নির্বাচন নয়। সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি।

আপনি কোনো দলকে ফেলে দিতে পারেন না : সাবেক সিইসি আবু হেনা
আপনি কোনো দলকে ফেলে দিতে পারেন না : সাবেক সিইসি আবু হেনা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মোহাম্মদ আবু হেনা বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আমি মনে করি নির্বাচন কমিশনকে দলগুলোর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করা উচিত। আমি নির্বাচনের জন্য মাত্র ২ মাস সময় পেয়েছিলাম। সকল দলের সঙ্গে বসে সর্বসম্মত হয়ে নির্বাচন করেছি। আপনি কোনো দলকে ফেলে দিতে পারেন না। তাদের কাছে নিয়ে আসুন। তিনি বলেন, নির্বাচন যদি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হয়, তবে সে নির্বাচন অর্থহীন। সেটি নির্বাচন নয়। সুতরাং নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করি। বুধবার দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে আয়োজিত সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও আগামী প্রকাশনীর উদ্যোগে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্যাবলি শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে সবার আস্থা অর্জন করতে হবে। সেই আস্থার ভিত্তিতে সবাইকে নির্বাচনে নিয়ে আসা সম্ভব। এ কাজটা খুবই প্রয়োজন।

নির্বাচন কমিশন কোনো দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধ্য করবে না এবং সে ধরনের কোনো প্রয়াসও কমিশন গ্রহণ করবে না, বিভিন্ন সময় বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া ঠিক নয়। আপনাকে সবাইকে (সকল দল) নিয়েই নির্বাচন করতে হবে। সবাইকে ডাকতে হবে। আমার দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন করা। আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলো সব দলকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যে জনবলের প্রয়োজন হবে সেটা রাষ্ট্রপতি দেবেন এবং অবশ্যকরণীয় কর্তব্য হলো সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে। এটার উপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশনের অগ্রসর হওয়া উচিত।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আরপিওতে কিছু গ্রে এরিয়া আছে। যেগুলো নিয়ে কাজ করা দরকার। হলফনামা যাচাই করা আরেকটি বড় সমস্যা। আমরা কমিশনে থাকতেও এ সমস্যায় পড়েছিলাম। সমস্যা উৎরাতে প্রার্থীর দেওয়া তথ্যগুলো আমরা এনবিআরে পাঠাতাম, কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। সবচেয়ে বড় যে সমস্যা, সেটি হল তথ্য দেখে তো ভোট হয় না। ভোট কীভাবে হয় আপনারা জানেন। তা আমি রিপিট করতে চাই না।

রাতের ভোট প্রসঙ্গে সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেছিলেন, বিষয়টি আদালতে চলে গিয়েছিল। এরপর আমরা অভিযোগ পেয়েছি যে, রাতে ভোট হয়েছে; তখন আমাদের করার কিছু ছিল না, এখানে আরপিও সংশোধনটা কি জরুরি? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, একাদশ ভোটে কে এম নূরুল হুদা গেজেট করেননি, কিছু করেননি। পরের দিন সকালে বিবিসি দেখিয়েছে রাতে ভোট হয়েছে। সে সময়ে তিনি বন্ধ করতে পারতেন। সেটা তিনি করেননি।  

সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণতন্ত্র হলো এমন এক শাসন ব্যবস্থা যেখানে সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। যেখানে জনগণ সে ক্ষমতা হয় সরাসরি না হয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রয়োগ করে। আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুফল অনেকাংশেই নির্ভর করে নজরদারিত্বে কাঠামোর কার্যকারিতার ওপর। আপনারা অনেকেই জানেন, ভোটারদের তথ্যভিত্তিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিচারপতি মো. আবদুল মতিন ও বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০০৫ সালে একটি যুগান্তকারী রায়ের মাধ্যমে হলফনামা আকারে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তাদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আট ধরনের তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করেন।

এই রায়কে ভণ্ডুল করার লক্ষ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহল সম্পূর্ণ গোপনে এবং জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আবু সাফা নামে একজন দুর্বৃত্তের পক্ষে আপিল দায়ের করে। সৌভাগ্যবশত সুজন-এর প্রচেষ্টায় এ অপচেষ্টা রোধ এবং প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। শুধু তাই নয়, আনন্দের বিষয় যে ভোটারদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকারের বিষয়টি এখন গণপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৭২-এ এবং ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত অন্য সব স্থানীয় সরকার আইনে/বিধিমালাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom