সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় পেল ইমরান খানের পিটিআই
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) জাতীয় পরিষদে একক বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে। পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সংরক্ষিত আসনের ভাগাভাগি নিয়ে আইনি লড়াইয়ে দেশের সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ । শীর্ষ আদালত জানিয়েছে , পিটিআই দলগত ভাবেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৩টি সংরক্ষিত আসন পাওয়ার যোগ্য। এই মামলায় নির্বাচন কমিশনে যুক্তি ছিল, আনুপাতিক ভোটের হার অনুযায়ী শুধুমাত্র স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিরই নারী এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ৭০টি আসন প্রাপ্য।
পিটিআইয়ের স্বীকৃতি বাতিল হওয়ায় তারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পেতে পারে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ১৩ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সরাসরি সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।রায়ে আটজন বিচারক পিটিআইয়ের পক্ষে মত দিলেও পাঁচজন দলটির বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তবে এই রায়কে ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য বিরাট বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় প্রতীক কেড়ে নেয়ায় ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে অংশগ্রহণ করেন পিটিআই নেতারা।পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ৭০টি আসন থাকে সংরক্ষিত।
এদের মধ্যে ৬০টি নারী এবং ১০টি সংখ্যালঘুদের জন্য। নির্বাচন শেষে এসব আসন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তাদের নির্বাচনী পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ভাগ করে দেয়া হয়। নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন জোট সরকারের দলগুলোর মধ্যে সংরক্ষিত আসন ভাগাভাগি করে দেয়া হলেও পিটিআইকে বঞ্চিত করে দেশটির নির্বাচন কমিশন। পরে তাঁরা সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে শপথ নিয়ে বিরোধী দলনেতার পদ পান। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দলীয় মর্যাদা ফিরে পেয়ে ২৩টি সংরক্ষিত আসনের দখল পেলে সংখ্যার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের দল পিএমএলএনের সঙ্গে ব্যবধান কমবে পিটিআইয়ের। যা নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে শাসক জোট।
লাহোর-ভিত্তিক রাজনৈতিক ভাষ্যকার মজিদ নিজামি আদালতের সিদ্ধান্তটিকে পিটিআই-এর জন্য "স্বস্তি এবং আশার আলো' হিসাবে বর্ণনা করেছেন, কারণ ২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদীয় অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে তাঁর দল রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।নিজামী উল্লেখ করেছেন যে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সংখ্যাগত ভারসাম্য উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন নাও হতে পারে, তবে আদালতের সিদ্ধান্ত আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে। বিধানসভায় সরকারের আর দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে না। এর মানে হল যে কোনো সাংবিধানিক সংশোধনী এবং আইন তারা পেশ করার পরিকল্পনা করেছিল তা পিটিআই-এর সমর্থন ছাড়া মসৃণভাবে পাস করতে পারবে না। সূত্র : আলজাজিরা