মজুরি বৃদ্ধি: প্রত্যাহারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের আন্দোলনের ঘোষণা চা শ্রমিকদের

চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আন্দোলন চলমান থাকবে। আমিতো শ্রমিকদের বাইরে যেতে পারবো না। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ রাখতে তখন আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্রমিকরা না মানার কারণে আবার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছি।

মজুরি বৃদ্ধি: প্রত্যাহারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের আন্দোলনের ঘোষণা চা শ্রমিকদের

প্রথম নিউজ, হবিগঞ্জ: মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ১০ দিন আন্দোলনের পর শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে প্রত্যাহার করেছিলেন চা শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মাত্র ২৫ টাকা মজুরি বাড়ায় প্রত্যাহারের কয়েক ঘণ্টা পরই ফের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এ নিয়ে শ্রমিকদের একাংশ বিভ্রান্তির মধ্যেও পড়েন।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আন্দোলন চলমান থাকবে। আমিতো শ্রমিকদের বাইরে যেতে পারবো না। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ রাখতে তখন আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্রমিকরা না মানার কারণে আবার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছি।

বাহুবল উপজেলার কামাইছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি বিমল ভর বলেন, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তবে যেহেতু রোববার সাপ্তাহিক বন্ধ তাই এদিন আমরা দেখবো। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা অবশ্যই মানি। কিন্তু তিনি যে অনুরোধ করেছেন তা আমরা কীভাবে বুঝবো। তিনি তো ভিডিও লাইভেও এসে বলতে পারতেন। তার নাম বিক্রি করে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

চুনারুঘাট উপজেলার দাড়াগাঁও চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রেমলাল আহির বলেন, আমরা বলেছি ১৪৫ টাকা মানি না। শ্রমিকরা কেউই তা মানে না। প্রধানমন্ত্রীর কথা তো আমরা শুনতে পাইনি। আমাদের নেতারাও শুনতে পাননি। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা শ্রদ্ধা করি, মানি। কিন্তু তিনি যে বলেছেন তার প্রমাণ কী? আমাদের তো চুক্তিও হয়নি। তিনি যদি ভিডিও লাইভে এসে বলতেন তাহলে আমরা মেনে নিতাম।

এদিকে চা শ্রমিকদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে রাতে জেলার বাগানগুলোর শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মিন্টু চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠকে শ্রমিক নেতারা জানান কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত পেলে তারা কাজে যোগ দেবেন।

দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি করেন চা শ্রমিকরা। এরপর তারা ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। এরই মধ্যে তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন।

শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বাগান মালিক প্রতিনিধি ও চা শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে তাদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন চা শ্রমিক নেতারা। কিন্তু সন্ধ্যার পর ফের তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom