বিয়ে করে চার মাস পর স্ত্রীকে ‘অস্বীকার’ ছাত্রলীগ নেতার

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক ছাত্রী।

বিয়ে করে চার মাস পর স্ত্রীকে ‘অস্বীকার’ ছাত্রলীগ নেতার

প্রথম নিউজ, রাজশাহী: হুজুর ডেকে বিয়ে করে চার মাস পর স্ত্রীকে ‘অস্বীকার’ করার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক হল শাখা ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। সেই সাথে স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ ও রাজনৈতিক ভয়ভীতি প্রদর্শনেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক ছাত্রী।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মমিনুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। সেই সাথে সৈয়দ আমির আলী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং ফিশারিজ বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি নড়াইল জেলায়। এ ছাড়া ভুক্তভোগী নারী রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর দেওয়া অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মমিনুল ইসলাম হুজুর ডেকে আমার সাথে মিথ্যা বিয়ের নাটক করেছে। স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আমার সাথে বসবাস করেছে। বিগত চার মাস আমি তার সাথে সংসার করেছি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে আমার সাথে খুবই খারাপ আচরণ করতে থাকে। এমনকি আমার সাথে সে যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়।’

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, ‘আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। আমার বাবা পঙ্গু, তার সাথে আমার যোগাযোগ নেই। আমার মা হার্ট অ্যাটাকের রোগী। আমার কোনো অভিভাবক নেই। সেই আমাকে রাজনৈতিক ভয় দেখাচ্ছে। আমি সাহায্য প্রার্থনা করছি। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।’

অভিযোগের বিষয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বলেন, ‘বিয়ের মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে বিগত চার মাস ধরে মমিন আমার সাথে থাকছে। আমরা কাজলায় একটা ভাড়া বাসাতে থাকতাম। রাঙামাটিসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা একসাথে ঘুরতেও গেছি। কিন্তু এখন সে আমাকে অস্বীকার করছে। বিয়ের কথা বললে সে ছাত্রলীগের হুমকি দেয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। থানায়ও জানিয়েছি। এ ঘটনার আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে তিনি ফোন বন্ধ করে রাখেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর সাইকা কবির নিতুকে আহ্বায়ক করে জহুরুল আনিস এবং মাহফুজুর রহমানসহ তিন সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি দুই পক্ষের সাথেই কথা বলবে। এটি যেহেতু বাইরের বিষয় তাই অভিযোগের সত্যতা মিললে সমাধানের জন্য থানায় পাঠানো হবে।’

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সহকারী প্রক্টর সাইকা কবির নিতু বলেন, আমি এখনো অভিযোগপত্রটি হাতে পাইনি। আমি সেটি সংগ্রহ করে কমিটির সদস্যদের নিয়ে কাজ শুরু করব।