বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেককে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নেওয়ার ছবি ভাইরাল
নরসিংদীতে বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে (৭০) কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গত শনিবার বিকেলে কোমরে দড়ি ও হ্যান্ডকাফ বেঁধে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শিবপুর থানা থেকে পাঠানোর পর নরসিংদীর আদালতে তোলা হয়।
প্রথম নিউজ ডেস্ক:নরসিংদীতে বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে (৭০) কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নেওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গত শনিবার বিকেলে কোমরে দড়ি ও হ্যান্ডকাফ বেঁধে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শিবপুর থানা থেকে পাঠানোর পর নরসিংদীর আদালতে তোলা হয়।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে দড়িবাঁধা ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এ নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনা চলছে।
ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আবু ছালেক রিকাবদার (৭০)। তিনি শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন।
পুলিশ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে বিনা পরোয়ানায় নিজ বাড়ির সামনে থেকে আবু ছালেককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন শনিবার বিকেলে থানা-পুলিশ তাঁকে গত বছরের নভেম্বর মাসের একটি রাজনৈতিক মামলায় নরসিংদীর আদালতে পাঠায়। এ সময় তিনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর কোমরে দড়িবাঁধা ও হ্যান্ডকাফ পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। ওই দিন আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সংসদ সদস্য জহিরুল বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেককে থানায় আটক করে নেওয়ার পর খবর পেয়ে আমি ওসিকে কল দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম, তাঁকে যেন কোনো প্রকার অসম্মান বা হয়রানি না করা হয়। পরদিন কোমরে দড়ি বেঁধে তাঁকে থানা থেকে আদালতে পাঠানোর ছবি দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির বলেন, ‘গত শনিবার সারা দেশে বিএনপি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। কর্মসূচিটি শিবপুরে যাতে সফল না হয়, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে তাঁর নিজ বাড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নিতে হবে? তিনি কি পালিয়ে যাবেন? যে মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, ওই মামলার আসামি আমিসহ ১৮ জন।’
এ ঘটনায় এরই মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিবপুরের মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার আবদুল মান্নান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহসীন নাজির, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার প্রমুখ।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হাতকড়া পরানোর পরও কোমরে দড়ি বাঁধার কারণ জানতে চাইলে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, আবু ছালেক রিকাবদারকে কোমরে রশি দিয়ে বাঁধার বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। যাঁরা থানা থেকে আদালতে নিয়ে গেছেন, তাঁরা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। সেক্টর কমান্ডার ফোরাম ’৭১ নরসিংদীর সভাপতি ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোতালিব পাঠান বলেন, শিবপুরের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে পুলিশের দড়ি বাঁধার ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ সাধারণ মানুষ কষ্ট পেয়েছেন। জাতির বীর সন্তানদের যেন পুলিশ এভাবে আর অপমান করতে সাহস না পায়, এ জন্য সরকারের কাছে পুলিশকে সতর্ক করে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: