বিএনপি’র স্বপ্ন পূরণে আমেরিকাও আর আসবে না

শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের

বিএনপি’র স্বপ্ন পূরণে আমেরিকাও আর আসবে না

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপি’র স্বপ্ন পূরণের জন্য আমেরিকাও আর আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, মার্কিন সহকারী মন্ত্রী ডনাল্ড লু’র বাংলাদেশে আসার খবরে বিএনপি নেতারা আবার একটু চাঙ্গা হয়েছেন। আবার তারা ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর  হয়ে ওঠেছেন। আরে, লু আসছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। বিএনপি’র স্বপ্ন পূরণের জন্য কেউই আর আসবে না। গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী রোডে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, নয়া পল্টনে বিএনপি’র গয়েশ্বর চন্দ্র রায় একপশলা মিথ্যাচার করেছেন। আমি জানতে চাই, গয়েশ্বর বাবু এতদিন কোথায় পালিয়ে ছিলেন। মাথায় তো দেখছি গান্ধী টুপি।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন ভেগ ধরেছে। এখন মিথ্যাচার করছে।

পল্টনে দাঁড়িয়ে গয়েশ্বর বলেন, আমরা নাকি ভারতের দালাল। আরে এই অপবাদতো আয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানের। জিয়াউর রহমানের আমল, এরশাদের আমলেও আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু দালালি কারা করে? নরেন্দ্র মোদি যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তখন বন্ধের দিন সকালবেলা ভারতীয় দূতাবাসে ফুল আর মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিল ওই বিএনপির নেতারা। তাহলে দালাল কারা?’ সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভারতে গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলে গিয়েছিলেন। ঢাকায় বিমানবন্দরে যখন সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলো- আপনি দিল্লি সফর করলেন, গঙ্গার পানি চুক্তির কি হলো? বেগম জিয়া তখন বলেন, আমি তো ভুলেই গিয়েছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এই নির্বাচনের আগে টেলিভিশনে হঠাৎ দেখলাম হাশি খুশি, কী ব্যাপার- পরে শুনলাম ভারতের আপ্যায়নের ডিনার খেয়ে বিএনপি নেতারা হাসি খুশি। ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর। তাহলে দালাল কারা।’ তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। এদেশের ৪২ শতাংশ মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। শেখ হাসিনার সততাকে, দূরদর্শিতাকে, তার অর্জনকে, তার উন্নয়নকে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের ৪২ শতাংশ ভোটার। নির্বাচনে কোনো প্রাণহানী ঘটেনি। আজকে বিএনপি বলছে- উপজেলা নির্বাচনকে জনগণ নাকি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাহলে ৩৬ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ, যারা ভোট দিলো তারা কারা? তারা এই দেশের জনগণ। আজকে বিএনপিকে আমরা বলতে চাই, গঙ্গার পানি শেখ হাসিনাই এনেছে। পানি চুক্তি শেখ হাসিনাই করেছে। ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যার বাস্তবায়ন কে করেছে? শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের মতো আরেকটা বাংলাদেশ আমরা সমুদ্রে পেয়েছি। সেটাও শান্তিপূর্ণভাবে ভারত আর্ন্তজাতিক রায় মেনে নিয়েছে। আমাদের বক্তব্য ভারত আমাদের বন্ধু। আর এই বন্ধুত্ব আমাদের স্বার্থেই দরকার। তারা (বিএনপি) শত্রুতা করে আমাদের ক্ষতি করেছে, আমরা আর সেই অবস্থা চাই না।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন,  ‘কতো নাটক, জজ মিয়া নাটক। তারপর আরেফিন নাটক। 

বরিশালের এক লোককে বাইডেনের উপদেষ্টা বানিয়ে নয়াপল্টনে কি নাটকই না তারা করেছে। মিয়া আরেফিন ইংরেজিতে কথা বলে। হঠাৎ পুলিশ দিলো পিটুনি, পিটুনি খেয়ে বরিশালের স্থানীয় বাংলায় কথা শুরু করলেন। এখন আবারো নাটক শুরু করেছে।’ বিএনপি নেতাকর্মীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘শুরু করেন, খেলা কিন্তু আবারো হবে। খেলা আবারো হবে। জনগণের জানমাল সুরক্ষায় এই অপশক্তির বিরুদ্ধে খেলা আবারো হবে। এবার এমন এক শিক্ষা দিবো পালাতে পালাতে অলি গলি পার হয়ে বুড়িগঙ্গার পচা পানি খাবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি’র সঙ্গে এখন আর জনগণ নেই। তাদের আন্দোলন ব্যর্থ, ভুয়া, কর্মসূচি ভুয়া। এই ভুয়া দলের আন্দোলন জনগণ বিশ্বাস করে না।  সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, তাদের (বিএনপি) এখন একটাই অজুহাত ভারত এই সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাই ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখা যাবে না। তাহলে যারা যুদ্ধের সময় আমাদের সাহায্য করলো, এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিলো, খাবার দিলো তাদেরকে বর্জন করে অর্জন করবো কাদের এটা স্পষ্ট করে আপনাদের বলতে হবে। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।