বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে: ড. মোশাররফ 

গতকাল রোববার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর নয়াপল্টনে ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে: ড. মোশাররফ 
 বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে: ড. মোশাররফ 

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণ সরকারের প্রতি তাদের অনাস্থা জানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল রোববার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর নয়াপল্টনে ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ছাত্র সমাবেশ হয়। লাল-সবুজ টুপি,  জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে অংশ নেয়। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শিক্ষা, ঐক্য ও প্রগতি-এই তিন মূলনীতিকে ধারণ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল গঠন করেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. মোশাররফ বলেন, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে হবে। রাজপথে থাকতে হবে, ফয়সালা করতে। সরকারকে বিদায় করার বিকল্প নেই। ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে গণঅভ্যুত্থানে সরকারকে বিদায় করতে হবে। সরকার পতনের ১০ দফা’ বাস্তবায়নই নতুন বছরে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন,  আগামী দিনে আমাদের চ্যালেঞ্জ ১০ দফা বাস্তবায়ন। আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সকল রাজবন্দিকে মুক্ত করা। আর এটা করতে হলে যত শিগগিরই এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। অতএব আমি আজকের ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে এই ছাত্রদলের নেতৃত্বকে ধারণ করে ছাত্র দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে, শক্তিশাল হয়ে, সাহস নিয়ে আগামী দিনে আমাদের যে টার্গেট এই টার্গেট ১০ দফা বাস্তবায়ন এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা।

খন্দকার মোশাররফ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই সরকার পরিবর্তন করে যে জনগনের সরকার আসবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৭ দফা রুপরেথা দিয়েছেন আমরা বাংলাদেশকে সেই রুপরেখার আলোকে নির্মাণ করতে চাই। সেই যাত্রায় সকলকে সাথী হয়ে অগ্রসর হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। অন্ধকার ইনশাল্লাহ কেটে যাবে। আলোর পথে বাংলাদেশ।এই ছাত্র সমাজ এদেশের জনগন, বিএনপি, গণতান্ত্রিক-দেশপ্রেমিক এবং যুগপত আন্দোলনে যারা রয়েছে তারা এদেশে আলো দেখানোর জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করবে। সরকারের দমনপীড়নের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই সরকার যতই নির্যাতন করুক, আমাদের নেতাদেরকে যতেই কারাবন্দি করুক কোনো লাভ হবে না। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এদেশে ৬‘শর উপরে গুম করেছে, এক হাজারের উপরে বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, আমাদের ৩৭ লক্ষ্যের উপরে নেতা-কর্মীরা শহীদ। কিন্তু আমাদের আন্দোলন থামে নাই। আমি সরকারকে বলতে চাই, এতো কিছু করেও যখন আন্দোলনকে দমাতে পারেননি। জনগন নেমে গেছে রাস্তায়। আর আপনাদের কোনো রেহাই নাই। আমরা প্রমাণ করেছি।  

মোশাররফ বলেন, দ্রব্যমূল্যের উধর্গতিতে সরকারী সিন্ডিকেটের লোকজন পকেট ভর্তি করেছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করন করা হয়েছে।  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকারের অবৈধ নির্দেশ মানার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ জনগন বার্তা দিয়েছে এ সরকার রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না। তারা এ সরকারকে আর দেখতে চায়না। দশদফা কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।  ক্ষমতা ছাড়তে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। সবকিছু রাজপথে ফয়সালা করা হবে। সরকারকে বিদায় করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই, আর অগ্রভাগে ছাত্রদলকে থাকতে হবে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে। তিনি বলেন, ঢাকার সমাবেশ বানচাল করতে সরকার বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করেছে। সরকার যত নির্যাতন নিপীড়ন করুক আন্দোলনকে দমানো যাবেনা। জনগন রাস্তায় নেমেছে আর রক্ষা নাই। দশদফা বাস্তবায়ন করাই বিএনপির প্রধান চ্যালেন্জ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দশ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্ধকার কেটে যাবে আলোর পথে বাংলাদেশ। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছে সরকার। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলখানা।  ছাত্রদলকে উঠে দাড়াতে হবে। না দাড়াতে পারলে নেতাকর্মীদের জেলখানাই থাকতে হবে। ২৩ সাল হবে কলঙ্কমুক্ত সাল, বেগম জিয়াকে মুক্ত করা হবে, এ বছর মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে। সমাবেশ বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, রাজপথে সবকিছুর পয়সালা হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতায় হস্তান্তর করা না হলে ছাত্রদল ৯০ মত গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটাবে। হাসিনা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত রাজপথে থাকার অঙ্গীকার করেন তিনি। সাবেক ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সারাদেশকে কারাগারে পরিনত করেছে সরকার। এ অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সরকারকে ক্ষমতায় থেকে বিদায় করতে হবে। সরকারের সময় পুড়িয়ে গেছে। ধানাই পানাই করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবেনা। সরকার চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায থাকতে চায়। ২৩ সালে গণতন্ত্র ও বেগম জিয়াকে মুক্ত করার বছর। 

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান কোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক  মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের সভাপতি  হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মৎসজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুর করীম মজুমদার প্রমুখ। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom