পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন: সরকারকে মির্জা ফখরুল

আজ বুধবার বিকালে ইফতারের আগে  আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচরুখী এলাকায় উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন: সরকারকে মির্জা ফখরুল

প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগের রাতে ভোট হয়েছে, নিজেদের পছন্দমতো লোককে পার্লামেন্টে বসানো হয়েছে। বিচার, আইন- আদালত সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমাদের শ শ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। আজকে আমাদের গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্তানরা তাকিয়ে থাকে, কখন তাদের বাবা ফিরে আসবে।

আজ বুধবার বিকালে ইফতারের আগে  আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচরুখী এলাকায় উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এতই যদি উন্নয়ন করে থাকেন আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে থাকেন তাহলে এত ভয় কেন? তারা কথায় কথায় মায়ের বুক খালি করে দেয়, সন্তানের কাছ থেকে পিতাকে গুম করে দেয়।
মহাসচিব বলেন, প্রতি বছর তারা তিন-চারবার করে দাম বাড়ায়। আর বিদ্যুতের দাম তো বাড়ছেই। একদিকে তারা দুর্নীতি করে আরেকদিকে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়া এদেশে একটা ভোট হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন কিভাবে ভোট হয়েছে। সেখানে তারা তাদের পছন্দের লোকদের বসিয়ে দিয়েছে। আজ আইন-আদালত ধ্বংস হয়ে গেছে। এই আদালতের মাধ্যমেই আজ বেগম জিয়াকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানের নামে কোনো প্রমাণ নেই, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় পরে তার নাম যুক্ত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতে তিনি আবেদন করেছিলেন আমার কেস খারিজ করে দিন। সে মামলাটাকে তারা খারিজ করেননি। 
তিনি বলেন, জুবাইদা রহমানকেও তারা দেশে আসতে দিতে চান না। আমাদের ৬শ’র অধিক নেতাকে গুম করে দিয়েছে। আজ ইলিয়াস আলীর মেয়ে-ছেলে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে কবে তাদের বাবা ফিরে আসবে। হাজার হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে বিনা বিচারে। এভাবে এদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সাংবাদিকদের গলা চেপে ধরা হয়েছে। আপনারাা লিখতে পারবেন না। যদি লিখেন, জেলে নেয়া হবে, চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হবে। সংবাদকর্মীরা কিভাবে চলবেন সেটা নিয়ে এখন তারা আইন তৈরি করছে। এটা তাদের পুরনো অভ্যাস। ’৭৫ সালে একইভাবে আওয়ামী লীগ তাদের এ হত্যা, গুম বন্ধ যখন কোনোভাবেই আড়াল করতে পারছিল না তখন তারা বাকশাল করেছিল। কিছুক্ষণ আগে শুনলাম যারা এখানে আসছিল তাদের ওপর হামলা হয়েছে। এতই যদি উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে ভয় পান কেন। একটা দল সম্মেলন করবে সেটাকে ভাঙেন কেন। শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করছি। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে দেখেন। এ দেশের মানুষ আপনাদের বিতাড়িত করে ছাড়বে।
তিনি আরো বলেন, যারা কথায় কথায় গুলি করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই, লড়তে হবে। আমাদের নেতা আজ আট হাজার মাইল দূরে, আমার নেত্রী গৃহবন্দি। আমাদের লড়াই করে এর থেকে বের হতে হবে। এদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক উপায়ে টোটাল ওয়ার করতে হবে। যারা তারেক রহমানকে বিশ্বাস করেন তাদের একটাই কাজ, ঐক্যবদ্ধ থাকা। আজকে শুধু তারেক রহমান কিংবা বেগম খালেদা জিয়ার লড়াই নয়। আমাদের দেশ স্বাধীন রাখতে পারব কি না, একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারব কি না সেই লড়াই। আমাদের এ সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা সরকারকে পরিষ্কার  বলেছি, পদত্যাগ করুন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। একটা নতুন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। সে সরকার সকলকে নিয়ে কাজ করবে। আসুন আমরা সকলে একসাথে এগিয়ে যাই।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ইউসুফ আলী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবি, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজীব প্রমুখ।