উজানের ঢলে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা
ভারতের মেঘালয়, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহ অনেক বেড়েছে।
প্রথম নিউজ, সুনামগঞ্জ: বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি আবারও বাড়ছে। এ অবস্থায় বন্যার আশঙ্কা করছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বাড়তে পারে পানি। এরই মধ্যে ভারতের মেঘালয়, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহ অনেক বেড়েছে। সেই সঙ্গে সুনামগঞ্জে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, চলতি, খাসিয়ামারা ও পুরাতন সুরমাসহ সব নদীতে পানি বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে পানি কমলেও বাড়বে সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের নদ-নদীর পানি।
সুনামগঞ্জে চলতি বছরের ৩০ মার্চ থেকে প্রথম দফায় উজানের ঢল আসা শুরু করে। ৯ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফায় ঢল নামে। এখন চলছে তৃতীয় দফা ঢলের প্রবাহ। সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১১টা থেকে সুনামগঞ্জে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বৃষ্টির পানি ও উজানের ঢল এক হয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলতি বছর জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ৩ এপ্রিল থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ধর্মপাশা, শাল্লা, ছাতক, দিরাই, তাহিরপুর উপজেলার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৩০ হাজার কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সোমবার বিকাল পর্যন্ত ৬০ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে। জেলার বিভিন্ন হাওরে কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে কৃষকদের ধান কেটে দেওয়া হচ্ছে। বাইরের জেলার শ্রমিক ও স্থানীয় কৃষকরা হাওরের ধান কাটছেন। ২৮ জাতের ধান কাটা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২৯ জাতের ধান কাটতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। জমির ধান ৮০ শতাংশ পাকলে কেটে ফেলতে বলা হয়েছে কৃষকদের।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান কবীর বলেন, উজানের ঢলে তাহিরপুরের হাওরগুলোতে পানির চাপ বাড়ছে। বাঁধ টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পানি আরও বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। বিশ্বম্ভপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, বিশ্বম্ভপুর উপজেলার হাওরের ফসল এখনও সুরক্ষিত রয়েছে। সব প্রতিকূলতা ও আশঙ্কা মাথায় রেখে ধান কাটছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে করচা, আংগারুলি, পুটিয়া, শনি ও হালির হাওরে রোপণকৃত বোরো ধানের ৬৩ শতাংশ কাটা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জের পানি ধীরে ধীরে বাড়বে। কোথাও বিপৎসীমার কাছাকাছি যেতে পারে। বিষয়টি নির্ভর করছে উজানের ঢল নামার ওপর। ঢল নামলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। না নামলে ভালো হবে। এখন পানি স্থির আছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews