ইইউর বক্তব্যের সংশোধন চায় আওয়ামী লীগ

গতকাল সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ইইউর বক্তব্যের সংশোধন চায় আওয়ামী লীগ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপির ‘আট হাজার’ নেতা-কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আটক করার কথা জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল যে বিবৃতি দিয়েছেন, সেই বিবৃতিতে সংশোধন চায় আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি থাকায় এমন বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। তবে ইইউ বাংলাদেশের বন্ধুদের ফোরাম হওয়ায় বোরেলের বক্তব্যের নিন্দা জানাবে না আওয়ামী লীগ।

গতকাল সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি ভার্চ্যুয়ালি সিলেটের বালাগঞ্জে বড়ভাঙ্গা সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে দেখলাম ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে একটা বিবৃতি এসেছে, জেলে আছে আট হাজার বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী, এঁদের মুক্তি দিতে হবে। ইইউ আমাদের বন্ধুদের ফোরাম। আমরা তাদের নিন্দা করতে চাই না। তাদের তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি আছে। এ ঘাটতি থেকে হয়তো তাদের আন্তর্জাতিক শাখার প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন। হয়তো তিনি তথ্যের ঘাটতির কারণে যথাযথ বক্তব্য দিতে পারেননি।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্যই বলেছে, এখানে কতজন গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশকে মারলে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না? বিচার হবে না? এটা কে বলবে? ইইউ খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে বক্তব্য দেবে এবং তাদের বক্তব্যের সংশোধন দেবে—এটা আমরা আশা করি। আমরা এখানে তাদের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়াতে চাই না। বাংলাদেশেও ঝগড়া চাই না। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অপারেশন) আনোয়ার হোসেন আজ প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত এবং পরোয়ানাভুক্ত ১৪০০-১৫০০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এখনো প্রতিদিন গ্রেপ্তারের সংখ্যা প্রায় সে রকমই রয়েছে। মামলার আসামি ছাড়া বিএনপির কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভালো মানুষ। কিন্তু তাঁকেও বলতে চাই, এ সময় সতর্ক থাকতে হবে। যাদের দায়িত্ব দিলেন, ওখানে একটা গাড়িতে আগুন দিয়েছে, ওদের শায়েস্তা করো। শায়েস্তা করতে গিয়ে নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল। নিরীহ মানুষকে কোনো অবস্থাতে কোথাও গ্রেপ্তার করা যাবে না। যারা সত্যিকারের অপরাধী, শাস্তি কেবল তাদেরই প্রাপ্য। এটা হলো আমার শেষ কথা।’

নিজ দলের নেতা-কর্মীদের ‘সতর্ক পাহারায়’ থাকার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগুন, অস্ত্র নিয়ে নেমেছে ওরা। চোরাগোপ্তা হামলা করে আন্দোলন করতে চায়, সরকার হটাতে চায়। এ লক্ষ্য নিয়ে তারা এগোচ্ছে। নেতা-কর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

ফাইনাল খেলা কার সঙ্গে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা নির্বাচন করবে, তাদের সঙ্গে হবে। আওয়ামী লীগ কাউকে ছোট ভাবে না। যে বেশি ভোট পাবে, জয়ী হবে; যে কম ভোট পায়, সে পরাজিত হবে। এটাই খেলার বৈশিষ্ট্য। তিনি জানান, সিলেট দিয়েই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভা শুরু হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী; তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান প্রমুখ।