অনিয়ম হলে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। তফসিল অনুযায়ী ভোট আগামী ৭ জানুয়ারি। নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে ৩০০টি সংসদীয় আসনে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর অনিয়ম অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এসব কমিটিকে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত বিষয়াদি অনুসন্ধান করে তিনদিনের মধ্যে তা প্রতিবেদন আকারে কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে অনিয়ম বিষয়ে কমিশনের করণীয় নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব বা সুপারিশও ইসিতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) পরিপত্র-৫ জারির মাধ্যমে অনুসন্ধান কমিটিকে এ নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
এরই মধ্যে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার জন্য একজন যুগ্ম জেলা জজ বা জ্যেষ্ঠ সহকারী জজের সমন্বয়ে সারাদেশে ৩০০টি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে কমিশন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিগুলোর কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অনুসন্ধান কমিটিগুলোর কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র-৫ জারি করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
পরিপত্রে ইসি জানায়, আরপিও অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর লঙ্ঘনজনিত বিষয় বা ঘটনাসমূহ উল্লেখ করা হয়। ভোটে কোনো কার্য বা বিচ্যুতির ফলে ভীতি, বাধা, দমন বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বা পরিচালনা বাধাগ্রস্ত বা ব্যাহত করে এমন ঘটনাসমূহ অনুসন্ধান করতে হবে।
ইসি জানায়, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বা তার কাছে দাখিলকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে বা নিজ উদ্যোগে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত বিষয়গুলো বা ঘটনাসমূহ অনুসন্ধান করতে পারবেন। এমনকি ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত অভিযোগ ও ঘটনা নির্বাচন কমিশন/রিটার্নিং অফিসার/সহকারী রিটার্নিং অফিসার/নির্বাচনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কমিটির কাছ থেকে পেয়ে থাকলে তা অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন কমিশনের কাছে পাঠাবেন।
অনুসন্ধান কমিটি কোনো ব্যক্তিকে এর সম্মুখে হাজির হতে ও শপথপূর্বক সাক্ষ্য প্রদানে এবং কমিটির কাছে প্রয়োজনীয় দলিল বা বস্তু দাখিল করতে কোড অব সিভিল প্রসিডিউর, ১৯০৮ (অ্যাক্ট ভি অব ১৯০৮) এর অধীন দেওয়ানি আদালতের ন্যায় একই ক্ষমতাবান হবেন। কমিটির কার্যক্রম পেনাল কোড, ১৮৬০ এর ১৯৩ ও ২২৮ ধারায় বর্ণিত বিচারিক কার্যক্রম হিসেবে গণ্য হবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, অনুসন্ধান কমিটি দায়িত্ব পালনের সময় নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম সংঘটিত হলে তা অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে। এই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন এবং সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই অনুসন্ধান প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর পাঠাবেন। শিগগির ওই প্রতিবেদন পিডিএফ ফরমেটে সচিবালয়ের আইন অনুবিভাগের উপসচিব (লিগ্যাল এফিয়ার্স) ও সিনিয়র/সহকারী সচিব (আইন বিষয়ক-১) এর ইন্টারনাল অ্যাকাউন্টে পাঠাবেন।
সংস্থাটি আরও জানায়, নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত জ্বালানি ও আপ্যায়ন ব্যয়সহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। অনুসন্ধান কার্য পরিচালনার ব্যাপারে কমিটির চাহিদা অনুসারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
এছাড়া অনুসন্ধান কমিটিসগুলোর কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ বা ব্রিফিং দেওয়া হবে। দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত আইন ও বিধি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অর্জনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল দেওয়া হবে।