ডলারের দর বাজারভিত্তিক হলে বৈদেশিক মুদ্রার বিদ্যমান চাপ কমবে

ডলারের দর বাজারভিত্তিক হলে বৈদেশিক মুদ্রার বিদ্যমান চাপ কমবে

প্রথম নিউজ, ঢাকা : ডলারের দর বাজারভিত্তিক করতে বারবার চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সংস্থা (আইএমএফ)। বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় দর নির্ধারণ না করে বাজার চাহিদার ভিত্তিতে ডলার বেচাকেনার কথা বলছে সংস্থাটি। আইএমএফর মতে, বাজারভিত্তিক হলে বৈদেশিক মুদ্রার বিদ্যমান চাপ কমবে।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আপাতত ডলারের দর বাজারভিত্তিক করার মতো পরিবেশ নেই। করিডোর পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে দর নির্ধারণ করা হবে। আইএমফের কারিগরি কমিটি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ কমিটি এ নিয়ে একাধিকবার অনলাইনে বৈঠক করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আরও বিষদ আলোচনায় আইএমএফের কারিগরি কমিটির সঙ্গে আগামী সপ্তাহে দফায় দফায় বৈঠক হবে। আগামী ২৭ মার্চ থেকে ১৫ দিন বৈঠক হবে। বৈঠকে মুদ্রা বাজার ছাড়াও ব্যাংকখাত সংস্কার নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

আইএমএফের প্রতিনিধিদল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ডলার বাজার, দেশের সুদহার ব্যবস্থা, তারল্য ব্যবস্থাপনা এবং খেলাপি ঋণ বিষয়ে আলোচনা করেছে। আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে বিভিন্ন শর্ত পরিপালনের বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য সংস্থার একটি প্রতিনিধিদল বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, দেশের রিজার্ভ নিম্নগামী হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রির বিষয়টি জানতে চায় আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংক সংস্থাটির জবাবে জানিয়েছে, রিজার্ভ কমলেও বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের আমদানির জন্য নিরুপায় হয়ে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার বাজার ব্যবস্থাপনায় আরও সংস্কার আনবে। যার মধ্যে রয়েছে ক্রলিং পেগের মাধ্যমে ডলারের লেনদেন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আইএমএফের প্রায় সব শর্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারা (আইএমএফ) ডলার বাজারভিত্তিক করতে সময় দিয়েছে। ক্রলিং পেগ চালুর পরামর্শ তাদের, এটা হলে নিয়ন্ত্রণে আসবে পরিস্থিতি। আইএমএফ কারিগরি কমিটির পরামর্শ নিতে আলোচানা সামনের মাসের মাঝামাঝি শেষ হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব ক্রলিং পেগ চালু হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডলার দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।

আইএমএফের প্রতিনিধিদল বলেছে, ডলারের দর দ্রুত বাজারভিত্তিক হলে রেমিট্যান্স বাড়বে। এতে রপ্তানি আয়ও দ্রুত ফেরত আসবে। আইএমএফ ডলার, সুদহার ছাড়াও খেলাপি ঋণ ও তারল্য পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চেয়েছিল। জবাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে বাজারে তারল্য কমানোর বিষয়ে সংস্থাটিকে অবহিত করে। আইএমএফের মতে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি ভালো অবস্থানে। তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সুদহার-ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।