সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস করছে: মির্জা ফখরুল

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস করছে: মির্জা ফখরুল

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। 
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল বিএনপি, দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদেরকে শুভেচ্ছা জানান।
এর আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ নেতারা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু আজ ৫০ বছর পরও সেই আশা পূরণ হয়নি। দেশের জনপ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাবন্দি করে রেখেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করেছে। আজকে দানব সরকার আমাদেরকে নির্যাতন করছে। দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটেছে অসত্যকে পরাজিত করে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ, প্রতিমা ভাঙচুর, লুটপাট ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এসবের মধ্যে দুর্গাপূজার মতো বড় ধর্মীয় উৎসব দেশের জনগোষ্ঠীকে সৌহার্দ্য ও শুভেচ্ছাবোধে উদ্দীপ্ত করে। যে কোনো বড় উৎসব জাতীয় জীবনে সংস্কৃতির দ্যোতক। দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। কামনা করি তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও কল্যাণ।
তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সুদীর্ঘকাল ধরেই এ উপমহাদেশে দুর্গাপূজা আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে। এ উৎসবে ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সব মানুষেরই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটে, নানা সম্প্রদায়কে সংযুক্ত করে নানাভাবে। এ উৎসব বাংলাদেশের একটি শাশ্বত সার্বজনীন উৎসব। উৎসব জাতি-রাষ্ট্রে সর্বমানুষের মিলন ক্ষেত্র। উৎসবের অন্তর্লোক হচ্ছে- শান্তি ও সহবস্থান। উৎসবের পরিসর বৃত্তাবদ্ধ নয় বরং বিস্তৃত ও সার্বজনীন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে বাংলাদেশে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করছে। ধর্মীয় উৎসব সাম্প্রদায়িক সীমানা অতিক্রম করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে এক বৃহত্তর শুভেচ্ছার প্রাঙ্গণে মিলিত করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ। আমরা সবাই বাংলাদেশি, এটিই আমাদের গর্ব, এটিই আমাদের একমাত্র পরিচয়। আমি শারদীয় দুর্গাপূজার সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের আন্দোলন চলমান। আন্দোলনে আপনারা শরিক হবেন। আমাদের আন্দোলন বর্তমান সংসদ বাতিল, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য। সেই দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি।