শহিদের রক্তের সঙ্গে কখনই বেইমানি করব না: জিএম কাদের

মঙ্গলবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

শহিদের রক্তের সঙ্গে কখনই বেইমানি করব না: জিএম কাদের
শহিদের রক্তের সঙ্গে কখনই বেইমানি করব না: জিএম কাদের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে নয়, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, নিজস্ব একটি দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সাধারণ মানুষই দেশের মালিক হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবে কারা-কিভাবে দেশ চালাবে। যদি ঠিকমতো দেশ না চলে তাহলে দেশের মানুষ আবার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন ও সরকার পরিবর্তনই হচ্ছে স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল চেতনা। শহিদের রক্তের সঙ্গে আমরা কখনই বেইমানি করব না। আমরা শহিদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করব।  মঙ্গলবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়, আমলাতন্ত্রের যোগসাজশে কিছু ব্যবসায়ী নামধারী লুটপাট করে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে। কোনো ব্যবসা নেই, কিন্তু হাজার-কোটি টাকা আয় করছে তারা। যারা দেশের মানুষের সম্পদ লুট করছে তাদের জন্যই সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করছে। দেশে লুটপাটের রাজনীতি চলছে। যে যত লুটপাট করতে পারবে, সে তত সম্মানিত ব্যক্তি। যে যত বড় লুটেরা সে তত দেশপ্রেমিক হিসেবে গলায় মালা নিয়ে ঘুরবে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যারা দেশের জন্য ভালো কাজ করতে চাচ্ছেন তারা যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না। 

জিএম কাদের বলেন, দেশের মানুষ সুশাসন চায়। দেশের মানুষ ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চায়। যেখানে গরিব ও দুঃখি মানুষের পাশে দাঁড়াবে সরকার। আমাদের সরকার গরিব ও দুঃখি মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। দেশের সম্পদ লুট করে যারা হাজার কোটি টাকার মালিক, তাদের পাশে দাঁড়ায় সরকার। 

তিনি বলেন, যেহেতু ডলার সংকট সৃষ্টি হয়েছে তাই সরকার সব জমি কৃষি কাজের আওতায় আনতে উপদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু যারা কৃষিকাজ করে দেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখছেন তাদের বাঁচিয়ে রাখতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখলে আমরা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগব না। কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজনে কৃষি ঋণ মওকুফ করতে হবে। 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ব্যাংক থেকে যারা হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়, তাদের ঋণ সরকার মাফ করে দেয়। কিন্তু কৃষকের ১০ হাজার টাকা ঋণ মওকুফ হয় না। লুটেরারা হাজার কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলে, আর কৃষকদের টাকায় সেই ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ব্যাংক লুটেরাদের জন্য কোনো শাস্তির ব্যবস্থা হয় না। রিশিডিলিউয়িংয়ের মাধ্যমে তাদের ওপরের দিকে তোলা হয়। ব্যাংক লুটেরাদের এমপি-মন্ত্রী বানানো হয়। আবার ১০ হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষক ঘরে ঘুমাতে পারে না। সামান্য টাকার জন্য পুলিশ কৃষকদের হয়রানি করছে। কৃষকদের বাঁচাতে যতটা ভর্তুকি লাগে তা সরকারকে দিতে হবে।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কৃষিতে নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। ৭৪ সালে সাত কোটি মানুষের দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে, আর এখন ১৮ কোটি মানুষের দেশে খাদ্য সংকট হচ্ছে না। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু উপজেলা পরিষদ সৃষ্টির মাধ্যমে ১৮ জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারা কৃষি ও পশুপালন থেকে শুরু করে দেশের গ্রামীণ মানুষের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন।
 
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদারের সঞ্চালনায় জাতীয় কৃষক পার্টির নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন শেখ আলমগীর হোসেন, শেখ হুমায়ুন কবির শাওন, কাজী জামাল উদ্দিন, রমজান আলী ভূঁইয়া, আব্দুল কুদ্দুস শাওন ও আবুল কাশেম।

টাঙ্গাইল জেলা নেতাদের শুভেচ্ছা : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির নবগঠিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। বনানী কার্যালয়ে জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম চাকলাদার ও সদস্য সচিব মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে নেতারা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: