কাদেরের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল-দিল্লি কি বলেছে জোর করে নির্বাচন করতে?
ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির এবং ১ দফা দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যােগে পেশাজীবী কনভেনশনে তিনি এই কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দিল্লি কি আপনাদের জানিয়েছে, এভাবে অপকর্ম করতে? দিল্লিকে বলেছে জোর করে একতরফা নির্বাচন করতে? সেটা পরিষ্কার করে বলুন?
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এতো বেশি পা চাটা হয়ে গেছে যে তাদের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ভয় নাই, ও রে ভয় নাই –তলে তলে আপস হয়ে গেছে-তাহলে স্বীকার করলেন এতো দিনে আপস ছিল না- আসলে আপনাদের মতো এতো বড় মিথ্যাবাদী পৃথিবীতে খুঁজে পাবেন না। এর আগে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন আলোচনা হয়েছে- আসলে কোন আলোচনা হয়নি। বলেছে বৈঠক হয়েছে- আসলে কোন বৈঠকও হয়নি। ছবি তোলার জন্য কত লবিং করেছে সেটা আমরা সবাই জানি।
বুধবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউটে পেশাজীবীদের এক কনভেনশনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২২টি পেশাজীবী সংগঠন এই কনভেনশনে অংশ নেয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রং হেডেড পারসন (শেখ হাসিনা) অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের কোন বৈধতা নেই। তাদের যেমন দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না, গণতান্ত্রিক বিশ্বের মানুষও বলে দিয়েছে তোমাদের আমরা আর বিশ্বাস করি না। যেসব দেশ সারাবিশ্বে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপে দেখতে চায়-তারা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়নি ও ২০১৮ সালেও কোন নির্বাচন হয়নি। এবারও তাদের অধীনে কোন নির্বাচন হতে পারে না-তাদের অধীনের কোন নির্বাচনকে কখনো বৈধতা দেয়া হবে না।
লন্ডনে শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার কথা এত করুচিপূর্ণ-যা নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। তবে তিনি তার বক্তব্যে কয়েকটি সত্য কথা বলে দিয়েছেন- তা হলো এদেশে যা কিছু ঘটে তা শেখ হাসিনার ইঙ্গিতে ঘটে-খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার স্বীকারোক্তিতে তা প্রমাণিত হয়ে গেছে। এতো স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে এদেশে বিচার বিভাগের কোন প্রয়োজন নাই-শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই হলো সিদ্ধান্ত। এখন শেখ হাসিনাকে নিজেকে নিজে সম্রাট ঘোষণা দিলে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় ২ বছর ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি, ইতোমধ্যে অমাদের ২২ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছে এ চলমান আন্দোলনে। এখনও আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ, কিন্তু একথা বলি নাই- আপনারা বাধা দিয়ে এ আন্দোলন সব সময় শান্তিপূর্ণ থাকবে।
খালেদা জিয়াকে অনুপ্রেরণা আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, খালেদা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে গণতন্ত্রে পুনরুদ্ধারের সাথে কোন আপস নেই, কোন শর্ত নাই, ১/১১ এর সময় অন্যরা দেশের বাহিরে গেছে কিন্তু আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া দেশের মাটি ছেড়ে যায়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ৪০১ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে সরকার চাইলে আইনে মধ্যে যেকোন নাগরিকের সাজা মওকুফ করে দিতে পারে, কিন্তু তারা এখন মিথ্যাচার করছে। তাহলে আওয়ামী লীগ সরাসরি বললেই তো পারে তারা খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়।
নির্বাচন নির্বাচন করে এবার কোন লাভ নেই। আগে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। এরপর নির্বাচনের কথা আসবে পরিষ্কারভাবে জানান মির্জা ফখরুল।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর অব. সৈয়দ ইবরাহিম, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।