ভিসানীতি দিয়ে আ.লীগের একটি পশমও ছেঁড়া যাবে না: লিটন
মঙ্গলবার রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, রাজশাহী: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ভিসানীতি দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি পশমও ছেঁড়া যাবে না। আওয়ামী লীগ একটি বিশাল বটবৃক্ষ। এ বৃক্ষকে সহজে উপড়ানো যাবে না। কারণ আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে। আমাদের পক্ষে জনসমর্থন রয়েছে। মঙ্গলবার রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত সাত-আট বছর থেকে বিএনপি আন্দোলন করছে। এবার বলছে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই সরকারের পতন ঘটবে। মুখে বলা সহজ, কিন্তু করা কঠিন। তারেক জিয়া লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করছেন, আর দেশে বিএনপির নেতারা লাফাচ্ছেন। এভাবে সরকারের পতন হবে না। কারণ দেশের মানুষ শান্তিতে আছেন।
লিটন বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে কী আসবে না- সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে কী হবে, সেটিও দেখা হবে না। তবে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
মহানগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন সড়কে আয়োজিত সম্মেলনে লিটন আরও বলেন, ২০১৪ সাল থেকে বিএনপি তাদের সহযোগী জামায়াত এবং হেফাজতকে নিয়ে অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে। এ সময় তারা ৩০০ সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছে। হাজার মানুষ তাদের হামলায় পঙ্গু হয়েছেন কিন্তু বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেনি।
রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলীর সভাপতিত্বে এবং জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আজম সেন্টু ও মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখের সঞ্চালনায় বেলা ১২টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সম্মেলন শুরুর পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং বীর শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী ছিলেন জিয়া। তিনি কারফিউ গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করেছিলেন। ৯৬ সালে প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন। জনগণ লাল কার্ড দেখিয়ে তাকে বিদায় করেছেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন শেখ হাসিনা। তিনিই ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে দেশে উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এজন্য সব ভেদাভেদ ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
উদ্বোধকের বক্তব্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্র যুব সমাজ মেনে নেবে না। যদি কেউ অসাংবিধানিক সরকার বাসানোর স্বপ্ন দেখেন, তবে সেটি দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছু না। শেখ হাসিনার কর্মীরা প্রতিযোগিতাকে ভয় পান না। শটকাটে ক্ষমতায় যাবার পথ শেখ হাসিনা খুঁজেন না।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই আমরা বাঘ-সিংহ। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আজকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মায়ের বুক খালি হয় না। মহল্লায় মহল্লায় গুলির শব্দ পাওয়া যায় না। আজকে শান্তির সুবাতাস বইছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যুবলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো ষড়যন্ত্র রাজপথে মোকাবেলা করতে হবে।
এছাড়া সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবাল, সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনের এমপি এনামুল হক এবং রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ডা. মনসুর রহমান।
সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা, হেলাল উদ্দিন, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিল্টন, কার্যনির্বাহী সদস্য শহিদুল ইসলাম সরকার, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ।
এদিকে রাজশাহী জেলা এবং মহানগর যুবলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে সন্ধ্যা ৬টার পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়।