বিচারকদের চিন্তা-চেতনায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাতে হবে : আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলতে হয়

বিচারকদের চিন্তা-চেতনায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাতে হবে : আইনমন্ত্রী

প্রথম নিউজ, ঢাকা : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলতে হয়। প্রতিযোগিতা ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারে না। সেজন্য সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিচারকদের নতুন নতুন আইন, জুডিসিয়াল ডিসিশন, পরিবর্তিত কর্মপরিধি ও কর্মপরিবেশ সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে হবে।

চিন্তা-চেতনায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাতে হবে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, কার্যক্ষেত্রে পুরনো ধ্যান-ধারণা পরিহার করে আধুনিক প্রযুক্তি, কারিগরি জ্ঞান এবং তত্ত্বীয় বিষয় সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে হবে।


শনিবার (১৩ মে) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সিনিয়র সহকারী জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ১৪৯তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সেবা সহজীকরণ প্রক্রিয়া চলছে। কে কত দ্রুত ও সহজে মানসম্পন্ন সেবা দিতে পারে, তা নিয়ে রীতিমত আন্তঃপ্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সামিল হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেবাকে স্বল্প সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে ও সহজে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। অনেক ক্ষেত্রেই এর সুফল জনগণ ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিচারপ্রার্থী জনগণকে দ্রুত বিচারিক সেবা দিতে বিচার বিভাগকেও সমানতালে এগিয়ে যেতে হবে।

আনিসুল হক বলেন, আমরা জনগণের সেবক। তাই আমাদের জবাবদিহিতার মূলে রয়েছেন জনগণ। তাদের সেবা দেওয়ার জন্যই আমরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব নিয়েছি। এই দায়িত্ব আমরা কে, কত সুন্দরভাবে পালন করতে পারি, তার ওপরেই নির্ভর করে আমাদের সুনাম ও সফলতা, সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সফলতা।


তিনি বলেন, জনগণকে সেবা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে, আমরা যদি যথাসময়ে তা দিতে না পারি বা সেবা দেওয়ার নামে জনগণকে হয়রানি করি, তাহলে নিজের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ন হবে, তেমনি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হবে।

তিনি প্রশিক্ষণার্থী উদ্দেশ্যে বলেন, জ্ঞান, দক্ষতা ও সামর্থ্য উন্নয়নের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়িয়ে যেকোন প্রতিযোগিতা মোকাবিলার উপযোগী হতে হবে, প্রতিযোগিতা মোকাবিলার মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। কেননা প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি করে যেকোনো জটিল পরিস্থিতি সহজে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের অভিযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধাপে ধাপে সফলতার সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে। প্রথম ধাপ রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের পথ ধরে এখন সরকার এসডিজি ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের পথে দুর্বার গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। ২০৪১ সালে আমরা অবশ্যই নতুন এক বাংলাদেশ দেখতে পাবো, যে বাংলাদেশ হবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ-উন্নত বাংলাদেশ; আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী স্মার্ট বাংলাদেশ, যেখানে গড়ে উঠবে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ। এই জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী হতে হলে আমাদের দক্ষ মানব সম্পদ গড়ার বিকল্প নেই।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সাওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।