গাজা ও লেবাননে হামলায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করেছে ইসরাইল

এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার বেসামরিকদের গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে।  

গাজা ও লেবাননে হামলায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করেছে ইসরাইল

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা ও লেবাবনে হামলা চালানোর সময় দখলদার ইসরাইল বাহিনী সাদা ফসফরাসের যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে নিশ্চিত করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার বেসামরিকদের গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে।  খবর রয়টার্স। এ অভিযোগের বিষয়ে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, সাদা ফসফরাস আছে এমন অস্ত্র গাজায় ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, বর্তমানে আমরা সেটি অবগত নই।

লেবাননেও ইসরাইলি বাহিনী এই অস্ত্র ব্যবহার করেছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এমন অভিযোগের বিষয়ে বাহিনীটি কোনো মন্তব্য করেনি।  হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, তারা ১০ অক্টোবর লেবানন থেকে এবং ১১ অক্টোবর গাজা থেকে ধারণ করা ভিডিও যাচাই করে দেখেছে, সেগুলোতে কামান থেকে ছোড়া গোলায় গাজা শহরের বন্দর এলাকা ও ইসরাইল-লেবানন সীমান্তের গ্রামীণ এলাকার ওপর একাধিক সাদা ফসফরাসের বিস্ফোরণ দেখা গেছে। 

মানবাধিকার গোষ্ঠীটি দুটি ভিডিওর লিঙ্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বলেছে, এগুলো দেখিয়েছে, ১৫৫ মিলিমিটার সাদা ফসফরাসের কামানের গোলা ব্যবহার করা হচ্ছে। স্পষ্টতই ধুম্রজাল তৈরিতে, চিহ্নিত করতে অথবা সংকেত দিতে এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। পোস্ট করা উভয় ভিডিওতেই লেবানন-ইসরাইল সীমান্তের কাছের দৃশ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। গাজায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করার অভিযোগ করা হয়েছে যে ভিডিওগুলোর ভিত্তিতে সেগুলোর লিঙ্ক পোস্ট করেনি তারা।

সম্প্রতি ফিলিস্তিনি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সম্প্রচারিত ভিডিওতে গাজার আকাশে পাতলা সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডুলি দেখা গেছে; সাদা ফসফরাসের গোলা ব্যবহারের কারণে এরকম ধোঁয়া তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।  রয়টার্স জানিয়েছে, তারা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ভাষ্য স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করে দেখতে পারেনি।

২০০৮-২০০৯ সালে গাজায় আক্রমণ চালানোর সময় সাদা ফসফরাসের গোলা ব্যবহার করেছিল ইসরাইল। তখন অনেকগুলো মানবাধিকার গোষ্ঠী দেশটির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছিল। ২০১৩ সালে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা সাদা ফসফরাসের যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। 

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস গত শনিবার ইসরাইলে আকস্মিক ব্যাপক হামলা চালায়, এতে অন্তত ১৩০০ জন নিহত হয়। এর প্রতিশোধ নিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এতে অন্তত ১৫০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উত্তর সীমান্তে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গেও পাল্টাপাল্টি হামলায় লিপ্ত হয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী।  

এদিকে গাজার বাসিন্দাদের সরে যেতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে দখলদার ইসরাইল। তবে হামাস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিরা তাদের জন্মস্থান ছেড়ে কোথাও যাবে না। এ ছাড়া ইসরাইলের আল্টিমেটাম উপেক্ষা করে দেশটিতে আরও অন্তত ১৫০টি রকেট নিক্ষেপ করেছে সংগঠনটি।