Ad0111

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা

বর্ধিত সময়ের মধ্যেও কেউ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের পাঠদান অনুমোদন বাতিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ১২ বছর পার হলেও যারা এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি তাদের ক্যাটাগরি (স্তর) নির্ণয় করা হবে। যারা যৌক্তিক কারণে স্থানান্তর হতে পারেনি তাদের সময় বাড়ানো হতে পারে শর্তভিত্তিক। বর্ধিত সময়ের মধ্যেও কেউ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের পাঠদান অনুমোদন বাতিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে জানা যায়, অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করায় ২৫ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ (কারণ দর্শানো নোটিশ) দেয় ইউজিসি। ভাড়াবাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী ভর্তি ও ক্লাস করানোর কারণে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়। এতে যেসব প্রতিষ্ঠান স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে আগের ঠিকানায় (অস্থায়ী) নানা নামে ক্যাম্পাস ধরে রেখেছে, সেগুলোর বিষয়ও উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হলেও স্থায়ী সমাধানের জন্য আবেদন করেনি এমন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শোকজ করে ইউজিসি। শোকজের জবাবে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সব কার্যক্রম স্থগিত ছিল বলে জানানো হয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ শেষ করে স্থানান্তরের জন্য আরও সময় দেওয়ারও দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ইউজিসির পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুক বলেন, অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের ১২ বছর পার হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হওয়ার আইন রয়েছে। সে আইন অনেকে মানছে না। তাই স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ ও স্থানান্তর বিষয়ে কার অবস্থা কী পর্যায়ে রয়েছে তাদের অবস্থান নির্ণয়ে স্তরভিত্তিক তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী কারা কবে স্থানান্তর হতে পারবে সেটি জানতে চাওয়া হবে। সে অনুযায়ী তাদের সময় দেওয়া হতে পারে। এতেও ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে আমরা কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১২ বছর পূর্ণ হলেও যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি তাদের ক্যাটাগরিভিত্তিক তালিকা তৈরি করা হবে। করোনার কারণে অনেকে পিছিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে। তাদের কার কী অবস্থা সেটি নির্ণয় করে ফের একটি বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে কার কী ধরনের সমস্যা ও সময় প্রয়োজন তা আলাদাভাবে আলোচনা করা হবে। কেউ যদি আরও কিছুটা সময় নিতে চায় শর্তভিত্তিক তাকে সময় দেওয়া হতে পারে। যারা শর্তভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১৯৯২ সালে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যুগের সূচনা। এখন পর্যন্ত দেশে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ৯৯টি। ২০১০ সালের আগে ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এর মধ্যে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ আদালতে মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে বন্ধ করে দেয় সরকার।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, অবশিষ্ট ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকিদের মধ্যে কেউ কেউ আংশিক ক্যাম্পাস নির্মাণ করেছে। জমি কিনেছে কিছু প্রতিষ্ঠান। আবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ধরনের পদক্ষেপই নেয়নি। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ২০১০ সালের পর থেকে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফা আলটিমেটাম দিয়েছে। সবশেষ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তখন বলা হয়েছিল, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এ নির্দেশ পালন করতে পারবে না তাদের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকার কথা ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পরিবর্তন আসে। বারবার আলটিমেটাম দেওয়ার পরও তা প্রতিপালনে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এতদিন মন্ত্রণালয় রহস্যজনক কারণে ‘নিশ্চুপ’ ছিল। এমনকি এ সংক্রান্ত মিটিং পর্যন্ত হয়নি। চার বছরে এই প্রথম শোকজের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হলো। বর্তমানে শুধু স্থায়ী ক্যাম্পাস নয়, সঙ্গে যে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ নেই তাদের বিষয়েও কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। যে সব প্রতিষ্ঠানে এ দুই পদ শূন্য তাদের করা হবে সতর্ক। এসব পদে নিয়োগ দিতে চাওয়া হবে তালিকা। যারা তালিকা পাঠাবে না তাদের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news