বিভাজনের রাজনীতি আমরা করি না: মির্জা ফখরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে একসঙ্গে চলার যে প্রত্যয় নিয়ে বিএনপি সৃষ্টি হয়েছিল, তার মূল কারণ ছিল সব জাতির, সব চিন্তা-ভাবনার সবাইকে নিয়ে এই দেশ গড়তে হবে, দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।’
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিভাজনের রাজনীতি আমরা করি না। আমরা সব সময় ঐক্যের রাজনীতি করি। বাংলাদেশকে তার আধ্যাত্মিকতার মধ্য দিয়ে, পার্থিব উন্নতির মধ্য দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হলে ইস্পাত কঠিন ঐক্য দরকার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বাসাবো বৌদ্ধবিহারে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা মহাসংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের’র অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে এসে আয়োজিত শ্রদ্ধার্পণ সভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এর আগে তিনি দলের পক্ষ থেকে মহাসংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের’র মরদেহে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
বক্তব্যের শুরুতেই বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মহাসংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের শান্তির জন্য, সৌহাদ্রের জন্য, মানুষে-মানুষে ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য সারাজীবন অতিবাহিত করেছেন। শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। তার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা এসেছি। বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য এসেছি।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ধর্মের নামে যে হানাহানি, সেই হানাহানি বাংলাদেশে সবচেয়ে কম হয়। কিছু কিছু কুচক্রী আছে, যারা মাঝে মাঝে ধর্মের বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ভাইয়ে-ভাইয়ের মতো বসবাস করেছে। বৌদ্ধ ধর্মের একটা প্রভাব, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সব জায়গায় সৃষ্টি করেছিল। এটা হচ্ছে শান্তির ধর্ম, কল্যাণের ধর্ম।’
বিএনপির মহাসচিব উল্লেখ করেন, সারা বিশ্বে শান্তি নষ্ট হচ্ছে। বিশ্বে এখন যুদ্ধ হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আজকে বার্মা থেকে রোহিঙ্গারা চলে এসেছে। অন্যদিকে, কাশ্মীরে মানুষেরা নির্যাতিত হচ্ছে। আর আজকে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের শিশু, নারীরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে। সমগ্র বিশ্বে অশান্তি আজকে। আমাদের দেশও আজ মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে বহুদূরে চলে এসেছে। গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে। ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ভিন্নমত পোষণকারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন,‘সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে একসঙ্গে চলার যে প্রত্যয় নিয়ে বিএনপি সৃষ্টি হয়েছিল, তার মূল কারণ ছিল সব জাতির, সব চিন্তা-ভাবনার সবাইকে নিয়ে এই দেশ গড়তে হবে, দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই যেন একসঙ্গে চলতে পারি, সে জন্য আমরা ভালোবাসা জানাতে, শ্রদ্ধা জানাতে আজকে এসেছি। ভবিষ্যতে খারাপ সময়-ভালো সময়, সুখ-দুঃখে যেন সবকিছু চিন্তা করতে পারি, ভাবতে পারি। দেশকে নিয়ে, মানুষকে নিয়ে, দেশের মানুষের অধিকার নিয়ে আমরা চিন্তা করি। আমরা মনে করি, ভোটাধিকার, কথা বলার অধিকার সবাই মিলে আদায় করতে হবে। এখানে সবার অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আছে।’
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু উল্লেখ করেন, কোনও বিশেষ ভাষা, বিশেষ সংস্কৃতি বা বিশেষ কোনও ধর্মের ভিত্তিতে কোনও জাতি গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সব জাতি, সব ভাষার মানুষকে নিয়ে একতাবদ্ধভাবে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের চিন্তায় দেশ গড়তে হবে।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য আব্দুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews