ফেসবু‌কে পোষ্ট দেয়ার পর গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু! 

আমার মৃত্যুর পরে আমার মুখ আমার মা বাবা এবং আমার স্বামীকে না দেখানো হোক

ফেসবু‌কে পোষ্ট দেয়ার পর গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু! 

প্রথম নিউজ, হাসানুল কবির নাজির কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর তা‌রিন সুলতানা (২৭) নামে এক গৃহবধূ ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিজ ঘরে গলায় দ‌ড়ি পেঁচিয়ে সি‌লিংয়ের সাথে ঝুলে থাকা অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ মৃত্যু রহস্যজনক মৃত্যু বলে ধারণা ওই গৃহবধূর স্বজনদের।

কু‌ষ্টিয়া শহ‌রের কাজী নজরুল ইসলাম লে‌ন(কোর্টপাড়া) এলাকার এক‌টি ভাড়া বাসার ২য় তলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তা‌রিন ব‌্যবসা‌য়ী নবীন হোসে‌নের স্ত্রী ও মে‌হেরপুর জেলার গাংনী থানার বেতবা‌ড়িয়া গ্রা‌মের ম‌জিবর রহমা‌নের মে‌য়ে। 

ওই গৃহবধূর  মৃত্যুর আগে তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, “আমার শেষ ইচ্ছা আমার মৃত্যুর পরে আমার মুখ আমার মা বাবা এবং আমার হাসবেন্ডকে না দেখানো হোক। এবং আমার লাশ আমার মা-বাবার বাড়িতে না নিয়ে আমার দাদী বাড়ি নিয়ে আমার শেষ কাজটুকু করে আমার দাদীর কাছে আমার কবর দেয়া হোক।”এর আ‌গে মা ও মে‌য়ের কা‌ছে ক্ষমা চে‌য়ে আরও দু‌টি ফেসবুক পোষ্ট দেন তা‌রিন। এর কয়েক ঘন্টা পরেই তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এলাকাবাসী ও নিহ‌তের পরিবা‌র সূত্রে জানা যায়, বছর আড়াই আ‌গে নবীন হো‌সেনের সা‌থে তা‌রি‌নের বি‌য়ে হয়। বি‌য়ের আ‌গে তা‌দের ম‌ধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।নবিন কুষ্টিয়ার স্থানীয় একটি পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। তা‌দের এক বছর বয়সী এক‌টি মে‌য়েও র‌য়ে‌ছে। শহ‌রের কোর্টপাড়া এলাকার এক‌টি ভাড়া বা‌সা‌তে বসবাস কর‌তেন তারা। তা‌রিন একজন আত্ম‌নির্ভরশীল মে‌য়ে ছি‌লেন। পড়াশুনার পাশাপা‌শি চিত্রাংকনসহ বি‌ভিন্ন বিষ‌য়ে তার পারদর্শীতা ছিল। “তাই‌য়িবা” না‌মে এক‌টি অনলাইন বু‌টিক ফ‌্যাশন হাউজ চালা‌তেন তি‌নি। ঘটনার সময় তা‌রিন ও তার মে‌য়ে বাড়িতে একা ছিল। পরে নিজ ঘরে সি‌লিং এর সাথে লাশ ঝুলে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পু‌লিশ‌কে খবর দেই। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেন।

 এদিকে লাশ উদ্ধারের পর সুলতানা নামে তার এক স্বজন ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে দাবি করেন এটা হত্যা। পোষ্টে তিনি লিখেছেন তারিন সুলতানা জুতি কে তার স্বামী নবীন আজ হত্যা করে ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখেছে। এর আগেও তার স্বামী অনেক বার তার উপর পাশবিক অত্যাচার করেছে। আমি নিশ্চিত ময়নাতদন্ত অত্যাচারের নিশানা পাওয়া যাবে। 
আমি ও আমার পরিবার এই হত্যার বিচার চাই। 

তারিন সুলতানা জুসির মা বাবার দাবি তার স্বামী নবিনের শারীরিক নির্যাতনে কুষ্টিয়ার বাড়িতে মারা যায়। আত্মহত্যা বলে চালাতে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থে‌কে মর‌দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কু‌ষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পা‌ঠি‌য়ে‌ছে। ধারণা করা হচ্ছে-হতাশায় ঐ নারী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। এ ব‌্যাপা‌রে তদন্ত চল‌ছে বলে জানান কু‌ষ্টিয়া ম‌ডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ও‌সি) সৈয়দ আ‌শিকুর রহমান।