নাহিদের ভিডিও বার্তা প্রত্যাখ্যান করে আজ বিক্ষোভের ডাক অন্যদের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: গোয়েন্দা পুলিশের ‘হেফাজতে’ থাকা অবস্থায় গতকাল রোববার রাতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করার একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তবে অন্য দুইজন সমন্বয়ক অভিযোগ করেছেন, জিম্মি করে নির্যাতনের মুখে এই বক্তব্য দেয়ানো হয়েছে। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় সারা দেশে আজ সোমবার ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ ঘোষণা করা হয়।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে উল্লেখ করে ওই বার্তায় বলা হয়, আগামীকাল (সোমবার) সারা দেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং প্রতিবাদ সমাবেশ। আমাদের দাবি আদায়ের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে বাংলাদেশের সব নাগরিককে অনুরোধ করছি।
বর্তায় বলা হয়, 'সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ও ছাত্রলীগের আক্রমণে নিহত শত শত শহীদের আত্মত্যাগ তিরস্কার করে ডিবি কার্যালয়ে বন্দুকের নলের মুখে জিম্মি করে সমন্বয়কদের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি আদায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এর আগে ডিবি হেফাজত থেকে ছয় সমন্বয়কের পক্ষে রেকর্ড করা এক ভিডিও বার্তায় রোববার লিখিত বক্তব্য পড়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত ও নিহত হয়েছেন। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ নানা স্থাপনায় সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি ছিল কোটা সংস্কার, যা সরকার ইতোমধ্যে পূরণ করেছে। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’ এই লিখিত বক্তব্যে নাহিদ ছাড়াও সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুমের সই ছিল।
তবে নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘সমন্বয়কদের জিম্মি করে নির্যাতনের মুখে যে স্টেটমেন্ট দেয়ানো হয়েছে, সেটা কখনোই জাতির নিকট গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আটককৃত সমন্বয়করা ভয়ভীতির মুখে গোয়েন্দা সংস্থার লিখে দেয়া যে বক্তব্য কেবল রিডিং পড়ে গেছে, আমরা সেই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি এবং একইসাথে জোরপূর্বক বক্তব্য আদায় করার মতো সরকারের এমন জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’