নারায়ণগঞ্জ জেলায় বছরে ৯৭ ধর্ষণ ও নারী হত্যা ৩৯
প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ জেলায় নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতনের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। চলতি বছরে এ জেলায় ৯৭টি ধর্ষণসহ ৩৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে এ জেলায় ধর্ষণের সংখ্যা ছিল ৯১টি ও হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ২৯টি। সে হিসেবে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় জেলা মহিলা পরিষদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দরা।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিনা পারভীন নারী ও শিশু নির্যাতনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ৯৭টি, হত্যা ৩৯টি, আত্মহত্যা ও আত্মহত্যার প্ররোচনা ৩৭টি, অপহরণ ২১টি, যৌন হয়রানি ৩২টি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ৪০, যৌতুকের জন্য নির্যাতন ২৭টি, শ্লীলতাহানি ১৭টি, বলাৎকার ১১টি, সাইবার ক্রাইম ১২টি, উত্ত্যক্তের ৫১টি ঘটনা ঘটেছে।
অথচ ২০২২ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭৯টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১২টি, ধর্ষণের পরে হত্যা ১১টি, নারী হত্যা ১৩টি, শিশু কন্যা হত্যা পাঁচটি, উত্ত্যক্তের ঘটনা ৩৬টি, যৌতুকের জন্য স্বামী কর্তৃক হত্যা ৯টি, অপহরণ পাঁচটি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ৮৭টি, বাল্যবিবাহ ১০টি, আত্মহত্যা ১৭টি, সাইবার ক্রাইম ১৭টির ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসিনা পারভীন বলেন, বিভিন্ন পত্রিকার তথ্য-উপাত্ত থেকে যাচাই-বাছাই করে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নির্যাতনের প্রকৃত চিত্র আরও অনেক বেশি। লজ্জায় ও প্রভাবশালী মহলের চাপে অনেক ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। এর জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে। আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
নারী কর্তৃক মিথ্যা ধর্ষণ ও নির্যাতনের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারী কর্তৃক ফাঁসানোর মামলার সংখ্যা খুব কম। তবে পুরুষরা এ দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছ। তবে পুরুষদের দেখাদেখি অনেক নারী এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে কাবিনের টাকা আদায় করছে। কিন্তু নারীদের এই সংখ্যা একেবারে কম।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আনজুমান আরা আকসির, লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানারা বেগম, প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ সুজাতা, রীনা আহমেদসহ প্রমুখ।