টেলিভিশনের চেয়ারম্যান পরিচয় দেওয়া এমদাদুল কারাগারে
এমদাদুল জলঢাকা উপজেলার পূর্ব গোলমুন্ডা চারআনী এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি নিজেকে তিস্তা টিভি নামে একটি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিতেন।
প্রথম নিউজ, নীলফামারী: নীলফামারীতে স্ত্রীর করা যৌতুকের মামলায় এমদাদুল হক নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (২ নভেম্বর) নীলফামারী চিফ জুডিশিয়াল জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
এমদাদুল জলঢাকা উপজেলার পূর্ব গোলমুন্ডা চারআনী এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি নিজেকে তিস্তা টিভি নামে একটি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিতেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে মহছেনা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় এমদাদুলের। বিয়ের সময় যৌতুক হিসবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছিল এমদাদুলের পরিবার। কিন্তু স্ত্রী মহছেনার পরিবার তাতে রাজি হয়নি। তবে বিয়ের সময় উপহার হিসেবে প্রায় চার লাখ টাকার আসবাবপত্র ও অনান্য সরঞ্জাম দিয়েছিল স্ত্রী মহছেনার পরিবার। বিয়ের কিছু দিন পর সন্তান গর্ভে আসলে অভিযুক্ত এমদাদুল ব্যবসা করার জন্য পুনরায় যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকার দাবিতে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন।
সন্তানের কথা ভেবে নির্যাতিত স্ত্রী মহছেনা সব মুখ বুঝে সহ্য করলেও সর্বশেষ গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর বাবার বাড়ি থেকে স্ত্রী মহছেনাকে পাঁচ লাখ টাকা আনার জন্য বলেন এমদাদুল হক। স্ত্রী তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এমদাদুল ও তার পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে অসুস্থ অবস্থায় স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন এমদাদুল। স্থানীয় এক অটোরিকশা চালকের সহযোগিতায় জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন দুই সন্তানের জননী মহছেনা বেগম। পরে সুস্থ হয়ে বাড়িতে এসে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য বসে দুই পরিবার। তাতেও পাঁচ লাখ টাকার দাবি জানান এমদাদুল। পরে ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর যৌতুক আইনে স্ত্রী মহছেনা বেগম মামলা করেন।
মামলার বাদী মহছেনা বেগম বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের জন্য আমাকে নির্যাতন করতেন এমদাদুল। সন্তানের কথা ভেবে সব সহ্য করতাম। দিন দিন নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। তবে শেষ সময়ে উনি পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে আমাকে অনেক নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের পর যখন হাসপাতালে ভর্তি, উনারা কেউ আমাকে দেখতে আসেননি। অথচ টিভি আছে সে ভয় দেখিয়ে নানাভাবে হুমকি দিতেন তিনি। আমি চাই দেশের আইন অনুযায়ী যেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
এমদাদুলের ভাই জাকারিয়া ইসলাম বলেন, উনি আমার ভাই হলেও আমাদের পরিবারের মানসম্মান সব শেষ করেছে। একটা টিভির কথা বলে চাঁদাবাজি, মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়সহ নানা অপকর্মে জড়িত সে। একাধিক বিয়েসহ নানা অপকর্মে জড়িত। আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করুক। বাদীপক্ষের আইনজীবী নূর আসাদুজ্জামান মিশন বলেন, স্ত্রী মহছেনা বেগমের করা মামলায় এমদাদুল হক মীমাংসার জন্য আবেদন করে জামিন চেয়েছিলেন। বিজ্ঞ আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। পরবর্তী শুনানিগুলোতে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী এর বিচার হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews