ওষুধের নিম্নমান ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদে ক্ষোভ বিরোধীদের
বৃহস্পতিবার সংসদে বিদ্যমান ওষুধ আইনে কসমেটিকস শব্দটি যুক্ত করে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস’ বিল পাশ হয়।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: বাজারে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ এবং লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংসদে বিরোধী দলের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার সংসদে বিদ্যমান ওষুধ আইনে কসমেটিকস শব্দটি যুক্ত করে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস’ বিল পাশ হয়। বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। তারা বাজারের ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ এবং লাগামহীনভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সরকার জনস্বার্থে এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কসমেটিকস ও ওষুধ দুটি ভিন্ন দ্রব্য। কিন্তু হঠাৎ করেই ঔষধ প্রশাসনের হাতে কেন এ ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হলেও কসমেটিকস ব্যবসায়ীদের সেখানে ডাকা হয়নি।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ওষুধের যে আন্তর্জাতিক মান রয়েছে সেই লেভেলটা আমাদের ঠিক রাখতে হবে। নিবিড় নজরদারি থাকতে হবে। স্যালাইনের দাম ১০০ টাকা নির্ধারিত থাকলে বিক্রি হয় ২০০, ৩০০ বা ৪০০ টাকায়। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এগুলো করা হয়। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
একই দলের পীর ফজলুর রহমান বলেন, ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণই ঠিকমতো করতে পারছি না। এর সঙ্গে আবার কসমেটিকস কেন আনা হলো? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব যে কাজ, সেটা ঠিকমতো করতে আমরা পারছি না। ওষুধের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, কোনো ব্যবস্থা নেই। ওষুধ ও কসমেটিস দুটি এক জায়গায় আনা হলো কেন?
জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কারো ব্যবসা ক্ষতি করার জন্য কসমেটিকস বিষয়টি আমরা এখানে নিয়ে আসিনি। আমেরিকা, ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ বহু দেশে আইনটি একসঙ্গে আছে। আমাদের উদ্দেশ্য কারো ক্ষতি করা নয়। প্রস্তুতকারীদের অবৈধ সুবিধা দেওয়া নয়, মানুষের স্বাস্থ্য যাতে ঠিক থাকে, মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়। অনেক ধরনের ভেজাল কসমেটিকস ও ওষুধ তৈরি হচ্ছে। যেগুলো মুখে লাগানো হয় এবং বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। এসব কসমেটিকস ব্যবহারের কারণে মানুষের স্কিন ক্যানসার হচ্ছে, লিভার, কিডনি ফেইল হচ্ছে, অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছে।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সাধারণ মানুষকে প্রতিমুহূর্তে অসাধু ব্যবসায়ী ও লুটেরারা শোষণ করছেন। তাদের সম্পর্কে বলা যাবে না। আর বাণিজ্যমন্ত্রী তো নিজেই বলে দিয়েছেন সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না। অবশ্য মানুষ এখন বলে বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই সিন্ডিকেটের মূলহোতা এবং গডফাদার। তাই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ এমন কিছু করবেন না, যাতে মানুষের কষ্ট হয়।