আল আকসা হাসপাতালে আর্তনাদ

সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ বলেছে, হাসপাতালের প্রায় ৬০০ রোগীসহ বেশির ভাগ মেডিকেল স্টাফ অজ্ঞাত  স্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

আল আকসা হাসপাতালে আর্তনাদ

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: তীব্র আক্রমণের মুখে গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আল আকসা মার্টিরস হাসপাতাল থেকে কয়েকশ রোগী ও স্টাফ অজ্ঞাত স্থানে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ বলেছে, হাসপাতালের প্রায় ৬০০ রোগীসহ বেশির ভাগ মেডিকেল স্টাফ অজ্ঞাত  স্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তারা কোথায় আছেন এ বিষয়ে কেউ কোনো খবর জানেন না। উভয় সংস্থাই বলছে, হাসপাতালটি চলছে শতকরা মাত্র ৩০ ভাগ স্টাফ দিয়ে। কয়েক মিনিট পর পর সেখানে রোগী আসছেন। গাজায় ইসরাইলের ভয়াবহ বোমা হামলায় আহতদের প্রতিক্ষণ নেয়া হচ্ছে সেখানে। কিন্তু সীমিত সংখ্যক স্টাফ দিয়ে তাদের সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে গিয়েছে।

ফলে এক বিশৃংখল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়কের অফিসের কিছু স্টাফ রোববার দিয়েইর আল-বালাহ হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন। এটিই সেখানে সচল থাকা একমাত্র হাসপাতাল। সেখানে তারা দেখতে পেয়েছেন তীব্র বোমা হামলায় আহতরা আল আকসায় চিকিৎসা সহায়তার জন্য ভিড় করছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রিপোর্টে বলেছে, ৫ থেকে ৭ই জানুয়ারির মধ্যে ২২৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ২৯৬ জনকে আহত করেছে ইসরাইল। হাসপাতালটির পরিচালক বলেছেন, তীব্র শত্রুতাপূর্ণ পরিবেশ এবং চলমান উদ্ধার অভিযানের কারণে স্থানীয় বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রায় ৬০০ রোগী অজ্ঞাত স্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা সিন ক্যাসি বলেন, কয়েক মিনিট পর পরই নতুন নতুন রোগী আসছেন হাসপাতালে। তাদেরকে চিকিৎসা দিতে আছেন মাত্র ৫ জন ডাক্তার। শত শত রোগীকে সেবা দেয়া তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাস্তবেই পরিস্থিতি নৈরাজ্যকর। হাসপাতালের পরিচালক আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি অনুরোধ করেছেন যাতে তার হাসপাতালটিকে সুরক্ষিত রাখা হয়, যদিও বেশির ভাগ স্টাফ সরে গেছেন।

ইসরাইলি সেনারা তাদের অভিযান জোরালো করার ফলে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং মেডিকেল এইড ফর প্যালেস্টাইন বলেছে, ওই হাসপাতালে কর্মরত তাদের জরুরি মেডিকেল টিমকে সরে যেতে এবং কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে বলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস বলেছেন, হাসপাতালের করিডোর রক্তমাখা। তার ওপর বিশৃংখল অবস্থায় পড়ে থাকা সব বয়সী রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে দেখেছেন তার স্টাফরা। তিনি বলেন, গাজার মধ্য এলাকায় এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল হলো আল আকসা। এখনও তা সচল ও সুরক্ষিত আছে। সেখানে জীবনরক্ষাকারী সেবা দেয়া হচ্ছে। এরপর যদি সেখানে আরও ক্ষতি করা হয় তাহলে তা আর সচল থাকতে পারবে না। সেখানে আরও ক্ষতি করা হবে মানবাধিকারের প্রতি নৈতিক দুর্ভোগের বিষয়। ওদিকে ক্যাসি বলেছেন, তার টিম ওই হাসপাতালে কয়েক হাজার রোগীর ডায়ালাইসিস প্রয়োজন। এছাড়া মানসিক ক্ষত আছে অনেকের। রোববার ওই হাসপাতালে কিছু মেডিকেল সরঞ্জাম ও বেড দিয়েছেন তারা।