আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে আবার ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটানোর জন্য: রিজভী

শনিবার (৫ অক্টোবর) বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর বেইলিরোড এলাকায় বিএনপির উদ্যোগে ডেঙ্গু সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে আবার ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটানোর জন্য: রিজভী

প্রথম নিউজ, অনলাইন: আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে আবার ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটানোর জন্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। একটা কঠিন দুর্যোগময় মুহূর্ত চলছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হচ্ছে আবার ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটানোর জন্য। আবার ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য টাকা পর্যন্ত নাকি ছড়ানো হচ্ছে। সংবাদপত্রে উঠে এসেছে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, বিভিন্ন প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের পক্ষের লোকদেরকে বসানোর জন্য। শনিবার (৫ অক্টোবর) বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর বেইলিরোড এলাকায় বিএনপির উদ্যোগে ডেঙ্গু সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, 'প্রশাসনের অনেক আমলাদের সঙ্গে নাকি সেই গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ হচ্ছে। তারা তাদের পছন্দমত ডিসি, তাদের পছন্দমত ডেপুটি কমিশনার নিয়োগ করবে। এটা অত্যন্ত বিপদজনক সংবাদ। এখন যতটুকু নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে, যে মুক্ত পরিবেশ তৈরি হচ্ছে আমরা কথা বললে পারে পুলিশের এসে গ্রেপ্তার করছে না। এই যে পরিবেশ সেই পরিবেশকে নষ্ট করে আবার শেখ হাসিনার রাজত্ব কায়েম করে বাংলাদেশের জনগণের টাকা বিদেশে পাচার করা, লুট করা এবং যারা জনগণের পক্ষে কথা বলবে তাদেরকে আয়না ঘরে নিয়ে যাওয়া অথবা বিচার বহির্ভূত হত্যা করা কিংবা তাদেরকে চিরদিনের জন্য অদৃশ্য করে দেওয়ার যে ভয়াবহ হিংস্র কর্মসূচি গুলো শেখ হাসিনা গত ১৫-১৬ বছর করেছে।
রিজভী বলেন, 'শেখ হাসিনার যারা প্রভু যারা রক্ষা করতে চায় তারা নানাভাবেই হাসিনা এবং তার ফ্যাসিবাদের লোকদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করছে। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে আপনাদের প্রত্যেকটি কাজ হবে জনকল্যাণমূলক, আপনাদের প্রত্যেকটি কাজ হবে সমাজ সেবামূলক। জনগণ যেন বিপদজনক পরিস্থিতির মধ্যে না যায় সেটি আপনাদেরকে দেখতে হবে তা না হলে জনসমর্থন আপনাদের থাকবে না।
তিনি বলেন, 'ডেঙ্গু ঢাকা সহ সারাদেশে খুব বিপদজনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার অবস্থা খুবই খারাপ। এ পর্যন্ত প্রায় আড়াইশো মানুষ মারা গেছে সারাদেশে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ডেঙ্গু হওয়ার আগেই ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক বৃন্দের পরামর্শে প্রচারপত্র বিলি করছে। এই প্রচার পত্র যদি আপনারা পড়েন তাহলে ডেঙ্গুর আগাম সর্তকতা জানতে পারবেন। আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, তারা খুব দ্রুতগতিতে অতি তৎপরতার সঙ্গে যদি এটা মোকাবেলা না করেন তাহলে মহামারীতে পরিণত হবে। অনেক মানুষ মারা যাবে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, জনসমর্থনের সরকার, আন্দোলনের সরকার একটি ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং এই সরকারের দায়িত্ব অনেক বেশি। এবারে অতিমাত্রায় বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকায় এলাকায়, মহল্লায় মহল্লায়, বাড়িতে বাড়িতে মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। সুতরাং ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার আগেই যাতে প্রতিরোধ করা যায় সেই ব্যবস্থা সরকার। এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে গ্রহণ করতে হবে, যাতে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা যায়। 
তিনি বলেন, 'এর আগে ছিল স্বৈরাচারী সরকার, দানবীয় সরকার এরা ঔষধের টাকা পর্যন্ত পাচার করেছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য সিটি কর্পোরেশনে যে গোডাউন ছিল সেই গোডাউনে কোন ঔষধপত্র ছিল না, ছিল অন্য জিনিস। যে বাজেট বরাদ্দ ছিল সেই বাজেট তারা পাচার করেছে, টাকা আত্মসাৎ করেছে। আওয়ামী লীগের যারা কমিশনার ছিল তারা; এটা আমার কথা নয়, সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং আমি মনে করি এই ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে তারা তাদের বুকের রক্ত দিয়ে গণতন্ত্রের পথে দেশের মানুষকে হাঁটার যে সুযোগ করে দিয়েছে। সেই কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অতিদ্রুত ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। না করলে ঢাকাবাসী সহ সারা বাংলাদেশে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে যাবে।
লিফলেট বিতরণকালে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দিন মামুন, মেহেবুব মাসুম শান্ত, ওমর ফারুক কাওসার, পার্থ দেব মন্ডল, ছাত্রদল নেতা রাজু আহমেদ প্রমুখ।