মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তার ঘটনায় সরকার জড়িত : প্রিন্স
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ,ঢাকা: রাজধানীর শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের যে অপরাজনীতি, তা থেকে বাংলাদেশের কেউ তো নয় বিদেশিরাও আজকে নিরাপদ নয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তার ঘটনায় সরকার জড়িত।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রিন্স বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ব্যাপক ক্ষুণ্ণ হবে। বাংলাদেশে যে আজকে গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই, মানবাধিকার নেই, এখানে যে অপশাসন চলছে সেটা আরও ফুটে উঠবে।
সরকারের মদদে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তা করা হয়েছে দাবি করে প্রিন্স বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে প্রমাণ করে এর সঙ্গে তারা জড়িত। তারাই উস্কানি দিয়ে, সেখানে লোক পাঠিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাবাহী গাড়িতে আঘাত করিয়েছে। রাষ্ট্রদূতকে হেনস্তা করা হয়েছে। এর আগেরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গাড়িতে এই সরকারের নির্দেশে হামলা করা হয়েছে। এই কথা কেউ ভুলে যায়নি।
সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের সঙ্গে আবারও গুম,খুন ও হত্যার নির্মম খেলায় মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের সঙ্গে আবারও গুম,খুন ও হত্যার নির্মম খেলায় মেতে উঠেছে। কারাবন্দি বিএনপি’র শীর্ষনেতৃবৃন্দ সহ সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতিও করা হচ্ছে অমানবিক আচরণ। নিশিরাতের সরকারের সাজানো মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলনসহ সাবেক এমপি ও মন্ত্রীরা কারাগারে ডিভিশন পাওয়ার কথা থাকলেও শুরুতে তাদের ডিভিশন দেয়া হয়নি। বিএনপি শীর্ষ নেতাদের আটকের পর ২৪ ঘন্টার বেশি সময় তাদের লকআপ রাখা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃত অধিকাংশ নেতাকর্মী হৃদরোগ, ডায়াবেটিকসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত থাকলেও তাদের ওষুধপত্র পর্যন্ত কারাগারে দিতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের প্রয়োজনীয় কাপড় চোপরও কারাগারে তাদের নিকট পৌঁছানো যাচ্ছে না। কারাবন্দিদের পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কারাফটকে নিয়ে গেলে কারা কর্তৃপক্ষ তা ফিরিয়ে দিচ্ছে। কারাগারের ভিতর অন্য বন্দীদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারে না। আটককৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা মিথ্যা সাজানো মামলায় রাজবন্দী হলেও তাদের সঙ্গে আচরণ করা হচ্ছে চিহ্নিত খুনি ও দুধর্ষ আসামির মতো। যা কারাবিধি ও মানবিধারের সুস্পষ্ট লংঘন। সরকারের নির্দেশেই কারাকর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা কারাবন্দি বিএনপি শীর্ষ নেতাসহ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এমন ঘৃন্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাদেরকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রাপ্য চিকিৎসার সুযোগসহ অন্যান্য সুযোগ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার সাথে জানাচ্ছি যে, নিশিরাতের সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধ গুম, খুনসহ বিরোধী দল নিধনের কর্মসুচি থামছেই না। গুম, খুন, বিচারবর্হিভুত হত্যা ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে দেশকে বধ্যভুমিতে পরিণত করে দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর যাবৎ জোর করে ক্ষমতায় থাকা অবৈধ সরকার আবারও নির্মম হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসুচি স্তব্ধ করে দিতে গায়েবি ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের সঙ্গে আবারও বেছে বেছে তুলে নেওয়া হচ্ছে বিএনপির তরুণ নেতৃত্বকে। বিএনপি’র একজন ত্যাগী কর্মী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহিমকে গত ১২ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৮ টায় তুলে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করি আব্দুর রহিম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতেই রয়েছে। আব্দুর রহিমের মাতা আবেদা খানম গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ওয়ারী থানায় সাধারণ ডায়েরীতে উল্লেখ করেছেন, বিগত ১২ ডিসেম্বর রাত ৮ টা থেকে রহিমকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার ফোন খোলা থাকলেও গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আব্দুর রহিমকে তুলে নেওয়ার পর ৩দিন অতিবাহিত হলেও এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বীকার না করায় তার পিতা মাতাসহ পরিবার পরিজন এবং দলের সহকর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এছাড়াও নেত্রকোনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আতাউর রহমান ৬ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের দাবি তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে কিন্তু এখনো স্বীকার করছে না। আমি অবিলম্বে তাদের সন্ধান দাবি করছি, একই সঙ্গে তাদেরকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জোড় দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় এর দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গত ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ পরিকল্পিতভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে বিএনপি’র কার্যালয়ের ভিতরেই গুলি করে হত্যা করে পল্লবী থানাধীন ৫নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মকবুলকে । এ সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে প্রায় শতাধিত নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পুলিশের নিক্ষেপ করা টিয়ারশেল ও কাদাঁনো গ্যাসে ১ হাজারের অধিক নেতা-কর্মী আহত হয়। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে থাকা আহত প্রায় ৭ শত নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। দেশের সর্ববৃহৎ বিরোধী দল বিএনপি’র কার্যালয়ে এধরনের অভিযান পরিচালনা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহি:র্ভূত ও সংবিধান বিরোধী। সরকার দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করতেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বাহিনীকে ব্যবহার করে এধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। শুধু তাই নয় কোন প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া ওইদিন গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে ঘুমন্ত বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে। পুলিশি অভিযানের নামে দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে গ্রেফতার করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ^াস, প্রচার সম্পাদক ও সাবেক এমপি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ হারুন, ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ খালেক, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, নির্বাহি কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিব, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, বিএনপি’র দফতরে সংযুক্ত তারিকুল আলম তেনজিং, জাতীয়তাবাদী মৎসজীবী দলের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ রফিকুল ইসলাম মাহাতাব, ঢাকা জেলা বিএনপি’র সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহবায়ক প্রিন্সিপাল মাও. নেছার উদ্দিন, সদস্য সচিব প্রিন্সিপাল মাও. নজরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব হাজী মজিবর রহমান, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আবুল হোসেন খান, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সাঈদ ইকবাল টিটু, আহসান উদ্দিন খান শিপন, সাজিদ হাসান বাবু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মেহেবুব মাসুম শান্ত, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কারীমুল হাই নাঈম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফসহ প্রায় ৭ শতাধিক নেতাকর্মীকে। গ্রেফতারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বিএনপি অফিসের কর্মকর্তা রেজাউল করিম, সৌরভ ইসলাম সেলিম, মোতালেব হোসেন, নুর আলম লিটনসহ অফিস স্টাফরাও। এর আগে সাদা পোষাকে গ্রেফতার করা হয় যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, বিএনপি’র শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামকে। জামিন পাওয়ার পরেও বিএনপি’র সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনকে জেলগেট থেকে বারবার গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে।
গত ১৩ ডিসেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী সহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, ৭ ডিসেম্বর বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে মকবুল হোসেন হত্যা, মিথ্যা গায়েবী মামলা, হামলা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ জবর-দখল করার প্রতিবাদে দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ সমাবেশ/মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে:
যশোর জেলা বিএনপি’র কার্যালয় থেকে পুলিশ মাইক ও চেয়ার কোতয়ালী থানায় নিযে যায়। দুপুরে অবরুদ্ধ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জেলা বিএনপি’র প্রেস ব্রিফিং পরবর্তী বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল থেকে জেলা বিএনপি’র সহ-সাধারণ সম্পাদক হাবিব উল্লাহ, সদর উপজেলা মহিলা দল নেত্রী রিজিয়া পারভীন সহ ১৫ জন নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। মাগুরা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আলী আহমেদ ও সদস্য সচিব আকতার হোসেনকে গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে নিজ নিজ বাসা থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করে। পিরোজপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে তালা দিয়ে দেয়। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালিয়ে কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক কবির হোসেনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬০/৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। নেত্রকোণা জেলা বিএনপির প্রতিবাদ মিছিল শেষে নেতা-কর্মীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ আনোয়ারুল হকের বাসায় একত্রিত হলে সেখানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মিছিল করে হামলা চালায় ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। গতকাল সন্ধ্যায় ফেনী পৌর বিএনপির আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন বাবুলকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করে। বর্তমানে সে অত্যন্ত মুমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও সারাদেশে হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। এখনো আমরা অনেক নেতা-কর্মীর খোঁজ পাচ্ছি না। প্রতিদিনই আমাদের কাছে গ্রেফতারের নতুন নতুন তালিকা আসছে। আমি আটককৃত সকল রাজবন্দীদের গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনে দেশে আজ চরম অমানবিকতার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার তাদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট আড়াল করতে যেমন মিথ্যাচার করছে, তেমনি তাদের দমন-নিপীড়ন, অমানবিকতা আড়াল করতে সীমাহীন মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামীলীগের হাতে রাষ্ট্র যেমন নিরাপদ নয়, তেমনি মানবাধিকার, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার সহ জনগনের জীবন-জীবিকা নিরাপদ নয়। তাদের দুঃশাসনে দেশ যেন মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি মিডনাইট সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী-নেতারা যে ভাষায় বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছেন, বিএনপি’র সভা সমাবেশ-কার্যালয়ে হামলা করছেন, গ্রেফতার, আটক ও গুম করছেন, বা গেষ্টাপো কায়দায় সাদা পোষাকে তুলে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করছেন-এসব তাদের প্রতিহিংসাপরায়ণ অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী নেতারা প্রতিদিন মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে চরম বিষোদগার করছে। জনবিচ্ছিন্ন অবৈধ সরকারের এই ঘৃণ্য অপরাজনীতির ছোবল থেকে দেশী বিদেশী কেউ বাদ যাচ্ছে না। জনসমর্থনহীন গণবিচ্ছিন্ন সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে মানবাধিকার লঙ্ঘনকেই হাতিয়ার হিসেবেই বেছে নিয়েছে। জনগণের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে চরম ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। বাংলাদেশে গুম খুন হত্যার রাজনীতির হোতা আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার পর থেকেই তারা স্বাধীন বাংলাদেশে গুম খুনের অপরাজনীতির শুরু করে। তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে তখনই গুম খুন করে দমন নীপিড়ন চালিয়েছে। জনগণ এই ফ্যাসিবাদকে মোকাবিলা করে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে এসেছে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ফ্যাসিস্ট সরকারের একগুঁয়েমির পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন-“দেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে” জনগণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পথে প্রিয় মাতৃভূমিকে নিয়ে যেতে রাজপথে ফয়সালা খুঁজে নিতে আন্দোলন শুরু করেছে। দমন নিপীড়ন চালিয়ে গণতান্ত্রিক, মানবিক এবং সৌহার্দ্যের বাংলাদেশ পুনঃরুদ্ধারের আন্দোলন নসাৎ করতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, বিএনপি’র ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, বিএনপি’র সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, গ্রাম সরকার বিষয়ক সহ-সম্পাদক বেলাল আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সদস্য (দফতরে সংযুক্ত) মোঃ আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews