অন্তর্বর্তী সরকারে কারা থাকবেন
প্রথম নিউজ, ঢাকা : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। তবে তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্য হিসেবে থাকছেন কারা, সে ব্যাপারে সঠিকভাবে কিছু জানা যাচ্ছে না। এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা।
বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য ১৫ জনের মতো হতে পারে বলে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১৫ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা গেছে। ড. ইউনূস আজ দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে তালিকাটি চূড়ান্ত হবে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বুধবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে তালিকার বিষয়ে কথা বলেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। কারা কারা থাকতে পারেন, কতজন থাকতে পারেন-এসব নিয়ে আলোচনা চলছে৷
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বৃহস্পতিবার সকালে তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধি, সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও আলেম সমাজের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেই গঠিত হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’
বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি লিয়াজোঁ কমিটি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র মাহফুজ আলম বলেন, সমন্বিত রূপরেখা আজ ঘোষণা করা হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। কারা কারা থাকতে পারেন, কতজন থাকতে পারেন-এসব নিয়ে আলোচনা চলছে৷ কোনো রূপরেখা ও কাজের ভিত্তিতে দপ্তর ভাগ হবে, কী হবে না হবে, সেটি আজ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
লিয়াজোঁ কমিটির আরেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নাসীর আবদুল্লাহ বলেন, ‘লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে বিভিন্ন নাম দিয়েছেন। সব পক্ষের সঙ্গে কথা চলছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কেমন দেখতে চায়, কীভাবে চায়, কীভাবে হলে ভালো হয়, রাজনৈতিক শূন্যতা থেকে উত্তরণ কীভাবে ঘটানো যায়-এসব বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই শিক্ষার্থীদের ওপর আস্থা রেখেছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও একজন বা দুজনের নাম দিতে চান। তবে রাষ্ট্রপতি কেন তার পছন্দের লোক দেবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রশ্ন রয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। দলগুলো তাদের কাছেও পছন্দের কিছু নাম দিয়েছে। দলগুলো সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজেদের নাম দিতে চাইছে।
বিভিন্ন দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্য সদস্যদের মনোনীত করার আগে রাষ্ট্রপতি তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আলোচনার ব্যাপারে গতকাল পর্যন্ত তাদের কিছু জানানো হয়নি। বিএনপি নেতারা বলছেন, আলোচনার জন্য তাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার পরিচালনার জন্য তার নিজেরও কিছু পছন্দ থাকতে পারে। আজ দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করেই সরকারের অন্য সদস্যদের তালিকা চূড়ান্ত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তাদের দুজন প্রতিনিধি রাখতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও এক বা দুজনের নাম দিতে চান। তবে রাষ্ট্রপতি কেন তার পছন্দের লোক দেবেন, এ নিয়ে বিভিন্ন দলের প্রশ্ন রয়েছে।
এদিকে দেশবাসীর উদ্দেশে এক বার্তায় ড. ইউনূস বলেছেন, ‘কোনো প্রকার ভুলের কারণে আমাদের এই বিজয় যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিন দিন ধরে দেশে কার্যত কোনো সরকার নেই। ফলে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য তাগিদ দিচ্ছে।