তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ালো কাতার
কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট জানিয়েছে, রবিবার ৩৫০ টি কাঠামোর একটি প্রাথমিক ব্যাচ পাঠানো হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : তুরস্কের ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য কাতার গত বছরের বিশ্বকাপে ব্যবহৃত ১০,০০০ মোবাইল কেবিন এবং ক্যারাভান পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। গ্যাস সমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশটি বলেছে যে তারা সর্বদা মোবাইল কেবিনগুলি দান করার পরিকল্পনা করেছিল। ফুটবলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টের সময় দেশে আসা ১.৪ মিলিয়ন ভক্তদের উদ্দেশে এগুলির ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট জানিয়েছে, রবিবার ৩৫০ টি কাঠামোর একটি প্রাথমিক ব্যাচ পাঠানো হয়েছে। তুরস্কে কয়েক হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছে, কয়েক হাজার ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, লক্ষ লক্ষ গৃহহীন হয়েছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না।
অনেকে প্রবল শীতে বাইরে ঘুমাতে বাধ্য হয়েছিলেন। কাতার এবং অন্যান্য ধনী উপসাগরীয় দেশগুলি দুর্গত অঞ্চলে উদ্ধারকারী দল এবং সাহায্য পাঠানোর প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ত্রাণ তৎপরতার জন্য ১০০মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সৌদি আরব তুরস্ক ও সিরিয়ায় মাল বোঝাই আটটি বিমান পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার অষ্টম সৌদি ফ্লাইটটি উত্তর সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোতে অবতরণ করে। সৌদি আরব সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় বিরোধীদের একটি শক্তিশালী সমর্থক ছিল এবং অন্যান্য আরব দেশগুলির মতো সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাশার আসাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে খুব একটা আগ্রহী ছিলো না । এদিকে, ত্রাণ সংস্থা এবং সরকারগুলি তুরস্ক এবং সিরিয়ার কিছু অংশে সাহায্য পাঠানোর জন্য মঙ্গলবার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, কিন্তু দুর্যোগের এক সপ্তাহ পরে যারা তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই তীব্র ঠান্ডা থেকে আশ্রয় খোঁজার মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে লড়াই করছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি সবথেকে খারাপ যেখানে ১২বছরের গৃহযুদ্ধ ত্রাণ প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে।
সোমবার, জাতিসংঘ তুরস্ক থেকে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে আরও দুটি সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে জাতিসংঘের সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দামেস্কের সাথে একটি চুক্তি ঘোষণা করেছে। এছাড়াও সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলির কাছে কম্বল পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলের প্রধান মাহমুদ হাফফার বলেছেন যে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২,৫০০টি তাঁবু র ব্যবস্থা করা গেছে, তবে প্রায় ১৫০০ পরিবার এখনও আশ্রয়হীন রয়ে গেছে। হাফফার বলেছিলেন- ভূমিকম্পের নয় দিনের মাথায় এখনো অনেকের কাছে সাহায্য গিয়ে পৌঁছায়নি। ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা কাজ করছে না এবং তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন যে পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কয়েক ডজন পয়েন্ট নষ্ট হয়ে গেছে, যেগুলি রয়েছে সেগুলিও পানের অযোগ্য।
তুরস্কের বন্দর নগরী ইস্কেন্দেরুনে গত সপ্তাহ থেকে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো ট্রেনের বগিতে আশ্রয় নিয়েছে। ৫০ বছর বয়সী নিদা কারাহান আনাদোলু এজেন্সিকে বলেছেন-'ওয়াগনগুলি আমাদের বাসায় পরিণত হয়েছে। এর মধ্যেই আমাদের খেতে হবে, পান করতে হবে, বেঁচে থাকতে হবে। আমাদের চাকরি, জীবন, সবকিছু থমকে গেছে। ''
সূত্র : gulfnews.com
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: