আদালতের নির্দেশের পরও বন্ধ হয়নি একটি ইটভাটাও
স্থানীয় প্রশাসন বলছে সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ইটভাটা ধ্বংস সম্ভব নয়।
প্রথম নিউজ, সাভার: ঢাকাসহ রাজধানীর চারপাশে পাঁচ জেলায় অবৈধ সব ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় পার হলেও সাভার ও ধামরাইয়ে একটি ভাটাও ধ্বংস করেনি প্রশাসন। যদিও স্থানীয় প্রশাসন বলছে সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ইটভাটা ধ্বংস সম্ভব নয়। গেল ১ মার্চ একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি ইকবাল করিমের বেঞ্চ ঢাকাসহ রাজধানীর চারপাশে পাঁচ জেলায় অবৈধ সব ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে ধ্বংসের নির্দেশ দেন।
গত ৯ এপ্রিল সাভার ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার গেন্ডা, শিমুলিয়া, আশুলিয়া, বিরুলিয়াসহ আশপাশের ইটভাটাগুলো চলছে দেদারসে। মাঝে মাঝে দুই একটি সংস্থা অভিযান চালালেও বাকি দিনগুলো থাকে বাধাহীন। মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় কিছুটা মন্থর গতি কার্যক্রমে। পুড়ছে ইট, কোথাও আবার পোড়া ইট স্টক করছে শ্রমিকরা। এমন চিত্র ধামরাইয়ের ভাটা গুলোতেও। স্থানীয়রা জানান, সাভার ও ধামরাই উপজেলায় তিন শতাধিক ইটভাটা রয়েছে।
গেন্ডা এলাকার কর্ণফুলী ব্রিকসের কর্মচারী আনসার আলী জানান, এ বছর শুধু পরিবেশ অধিদপ্তরের লোক ছাড়া কেউ আসেনি। একদিনের জন্যও ভাটা বন্ধ থাকেনি। প্রশাসন জরিমানা করলেও ভাটার মালিক সেই জরিমানা পরিশোধ করে ভাটা চালু রেখেছেন। ১ মার্চের পর কেউ ভাটা বন্ধ করতে এসেছিল কিনা তা জানতে চাইলে আনসার আলী বলেন, কেউ আসেননি। শুধু এ ভাটা নয়, পাশের মধুমতি ব্রিকস, এখলাছ ব্রিকস ও ফিরোজ ব্রিকস সবগুলোই সচল।
সাভারের শিমুলিয়া এলাকার ফাইভ স্টার ইটভাটা মালিক কবিরঞ্জন সাহা বলেন, ভৌগোলিক সীমানায় আমরাটা কালিয়াকৈরে পড়েছে। তবে পাশের সাভার ও ধামরাইয়ের মতো আমরাও বাধাহীনভাবেই ব্যবসা করছি। কেউ বন্ধ করতে আসেনি। তবে অজানা এক ভয় কাজ করে। ধামরাইয়ের পিউর ব্রিকসের মালিক বোরহান উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি আমাদের এলাকায় চারটি ইটভাটাকে শুধু জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর, ধ্বংস করেনি। তাই আমরা সাহস পেয়ে খোলায় শেষ আগুন দিয়েছি।
পরিবেশবাদী সংগঠক লোকমান হোসেন চৌধুরী বলেন, আদালতের রায় বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যা খুবই দুঃখজনক। ইটভাটা বন্ধ না হলে পরিবেশ বাঁচানো যাবে না। তাই ভাটা বন্ধ করতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে প্রশাসনকে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী। তিনি বলেন, ইটভাটা ভেঙে দিলে মালিকরা তা ঠিক করে আবারও উৎপাদন শুরু করে। জেল-জরিমানার বিষয়টি তারা মাথায় রেখেই কাজ করেন। তাই সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ইটভাটা ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews