রক্তপাত প্রতিরোধে জাতীয় সরকার দরকার: আ স ম রব
শুক্রবার আ স ম রবের উত্তরাস্থ বাড়িতে সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইয়ের রাজনৈতিক দর্শন কেন্দ্রিক অদলীয় সংগঠনসমূহের যৌথ প্রতিনিধি সভায় আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির মোকাবিলায় সকল গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সমন্বয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে 'জাতীয় সরকার' গঠন করা দরকার। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ায় রাষ্ট্র বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তাই সম্ভাব্য রক্তপাত ও নৈরাজ্য প্রতিরোধে একমাত্র পথ হচ্ছে জাতীয় সরকার। নয়তো বিবাদমান রাজনৈতিক শক্তির অনৈক্য ও আত্মঘাতী সংঘর্ষে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিপন্ন হয়ে পড়বে। এই ভয়াবহ জাতীয় সংকটে কোনো একক শক্তি বা একক দলের পক্ষে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না।
শুক্রবার আ স ম রবের উত্তরাস্থ বাড়িতে সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইয়ের রাজনৈতিক দর্শন কেন্দ্রিক অদলীয় সংগঠনসমূহের যৌথ প্রতিনিধি সভায় আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন। এসময় তিনি অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান ও নাসিরুদ্দিনের দণ্ডাদেশ বাতিল করে তাদের মুক্তি দাবি করেন।
রব বলেন, অপশাসন ও দুঃশাসনে, শাসন প্রক্রিয়া ও সমাজদেহে যে গভীর ক্ষত এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। সর্বগ্রাসী লুণ্ঠন প্রক্রিয়ায় 'রাজতন্ত্র' প্রতিষ্ঠা, শোষণ-নিপীড়নমূলক রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ব্যবস্থা রাজনীতিকে সংঘাত-সংঘর্ষ ও চরম রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে গণজোয়ার ও গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে শাসকের পরিবর্তন সহজ হতে পারে কিন্তু সমাজের নবায়ন বা রূপান্তর অনেক কঠিন কাজ। এটা একটা ধারাবাহিক ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা, মানবিক ও নৈতিক সমাজ বিনির্মাণ করার উপযোগী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করতে না পারলে রাষ্ট্রক্ষমতা আবারও অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে; যা শুধরানো আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। শিক্ষা নিতে হবে ইতিহাস ও বাস্তবতা থেকে।
সভায় জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বলপূর্বক গুম, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শ্রমিকদের অধিকার সংকুচিত হওয়াসহ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতি ঘটায় জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক না হলে বাংলাদেশ চরম সংকটগ্রস্ত হয়ে পড়বে। সুতরাং ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবীসহ প্রজাতন্ত্রের সকল নাগরিকের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে দেশবিরোধী সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় অদলীয় সংগঠন সমূহের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেএসডি সহসভাপতি তানিয়া রব, মোহাম্মদ হাবিবউল্লাহ, স্বপন আশ্চর্য, তাসমিন রানা, সিকদার মোঃ নিজাম, মেজর (অবঃ) জাকির হোসেন, মোশারেফ হোসেন মন্টু, ব্যারিষ্টার সাদিয়া আরমান, অধ্যাপক মেহজাবীন রহমান, অধ্যাপক হামিদুল ইসলাম, কাজী তানসেন, ইউসুফ সরকার রুজেল, অয়ন আমান, দর্পন জামিল প্রমুখ।