প্রিগোজিন নিহত: দুর্ঘটনা নাকি পুতিনের প্রতিশোধ!
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: বিমান দুর্ঘটনায় অন্যদের সঙ্গে নিহত হয়েছেন ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। রাশিয়া তথা সারাবিশ্বে তিনি এক আলোচিত নাম। বিশেষ করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে স্বল্প সময়ের জন্য বিদ্রোহ করে অমিত সাহসের পরিচয় দিয়ে তিনি সারাবিশ্বের নজরে আসেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কতটা দুর্বল অবস্থায় আছেন, তা প্রকাশ হয়ে পড়ে তার ওই বিদ্রোহে। দেশ বিদেশে পুতিনের এই সামরিক দুর্বলতার বিষয়ে ফলাও করে রিপোর্ট প্রকাশ হয়। অর্থাৎ পুতিনের চেয়ে দৃশ্যত নিজের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করেন প্রিগ্রোজিন। বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুকে ঘিরে তাই এখন নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি স্বাভাবিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন নাকি তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। এমন প্রশ্ন অমূলকও নয়। কারণ, সাবেক গোয়েন্দা সংগঠন কেজিবির সাবেক বস পুতিন খেলেন খুব ঠাণ্ডা মাথায়।
বিদ্রোহের সময় তিনি মাথা খুব ঠাণ্ডা রেখেছিলেন। প্রিগোজিন তাকে বিশ্বের কাছে যে লজ্জাজনক অবস্থায় উপস্থাপন করেছেন, তার বদলা নেয়ার পরিকল্পনা তিনি করে থাকতে পারেন। এ জন্যই এমন প্রশ্ন সামনে এসেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
ওই দুর্ঘটনা নিয়ে ওয়াগনারের সঙ্গে সম্পর্কিত টেলিগ্রামের চ্যানেল ‘গ্রে জোন’ রিপোর্ট করে যে, অন্য ৯ জনের সঙ্গে এমব্রায়ের বিমানে করে আকাশে উড়ছিলেন প্রিগোজিন। রাজধানী মস্কোর উত্তরে টিভার অঞ্চলে এয়ার ডিফেন্স থেকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বিমানটি। জেট বিমানটি মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাচ্ছিল সাতজন যাত্রী ও তিনজন ক্রুকে নিয়ে। যদি ‘গুলি করা হয়েছে’ এই তথ্য সত্য হয়, তাহলে প্রশ্ন চলে আসে- কে বা কারা তাকে বহনকারী বিমানে গুলি করেছে বা করার নির্দেশ দিয়েছে? এখানেই আঙ্গুল তোলা হচ্ছে পুতিনের দিকে। এ দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বিমান পরিবহন বিষয়ক ফেডারেল এজেন্সি। বার্তা সংস্থা তাস’কে এই এজেন্সি বলেছে, টিভার অঞ্চলে বুধবার সন্ধ্যায় যে এমব্রেয়ার বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। যাত্রীদের তালিকা অনুযায়ী এতে ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নাম আছে।
গ্রে জোন বলেছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে স্থানীয় অধিবাসীরা দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন এবং বেশ বাষ্পের দেখা পেয়েছেন। বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, বিমানটি মাটিতে ধসে পড়ার পর তাতে আগুন ধরে যায়। এর ভিতর থেকে চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে প্রিগোজিনের মৃতদেহ আছে কিনা তা পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি।
রাশিয়ার আকাশ বিষয়ক এজেন্সি বলেছে, বিমানটি আধা ঘন্টারও কম সময় আকাশে ছিল। জুলাই মাসের শুরুর দিকে রাশিয়া সরকারের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, প্রিগোজিন এবং তার সঙ্গীরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ওই মিটিংয়ে ৩৫ জনকে আমন্ত্রণ করেছিলেন পুতিন। সাক্ষাৎটি তিন ঘন্টা স্থায়ী হয়। তিনি আরও বলেন, এসব কমান্ডারের নিজস্ব ব্যাখ্যা শুনেছেন পুতিন।